ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-
বাড়িতে হামলা চালিয়ে করা হয় লুটপাট। সেই হামলায় আহত হয় ২ জন। এ নিয়ে আদালতে দুই ভুক্তভোগী মামলা করলে তদন্তের দ্বায়িত্ব পড়ে দুই পুলিশ কর্মকর্তার উপর। ঘটনার দিনে হামলা ও লুটপাটের সত্যতা থাকলেও আসামীদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা। ঘটনার দিন কোন হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেনি এমনটিই জানিয়েছেন তার প্রতিবেদনে। তবে এঘটনায় আরেক পুলিশ কর্মকর্তা ঘটনার দিনে ঘটে যাওয়া সমস্ত সত্য বিষয়গুলো তুলে ধরেন তার প্রতিবেদনে।
এমনি এক অভিযোগ সংবাদকর্মীদের কাছে তুলে ধরেন, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ডাকবাংলা কাজী সড়কের মৃত তাহাজ উদ্দিনের ছেলে কাজী ফারুক ও তার ছোট বোন কাজী শাহানাজ। তারা ডাকবাংলা পুলিশ ক্যাম্পের এস আই সোহাগ হোসেনের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, আসামীদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে এস আই সোহাগ তার তদন্তে মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন দিয়েছেন।
ঘটনার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২ জানুয়ারি ঐ এলাকার মৃত তাহাজ উদ্দিনের ছেলে কাজী ফারুক ও তার ছোট বোন কাজী শাহানাজের উপর একই এলাকার সন্ত্রাসী আব্দুল বারী, আবুল কালাম ওরফে বাবুল মাস্তান, মোমিন ড্রাইভার, সালাম, কাজী মালেক, কাজী পিলু, কাজী বিশারত, কাজী সিরাজ,কাজী তরিকুল জমা জমি সংক্রান্ত কলহের জেরে হামলা চালায়।
সেসময় হামলাকারীরা কাজী ফারুক ও কাজী শাহানাজকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে এবং বাড়ির মালামাল, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, মোবাইল, ল্যাপটপ, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। ঘটনার পর ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেয় কাজী ফারুক। চোখে গুরুতর আঘাত পাওয়ায় সেখান থেকে ঝিনাইদহ চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি।
এ ঘটনায় কাজী ফারুক ও কাজী শাহানাজ মিলে আদালতে দুটি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তভার পড়ে ডাকবাংলা ক্যাম্পের এসআই সোহাগ হোসেন ও ঝিনাইদহ সদর থানার এস আই শামিম হোসেনর উপর। অভিযোগ রয়েছে, মামলার তদন্তে এস আই সোহাগ আসামীপক্ষের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ওইদিন কোন ঘটনা ঘটেনি বলে তিনি তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করে আদালতে জমা দেন। তবে আরেক তদন্ত কর্মকর্তা এস আই শামিম হোসেন ওইদিন লুটপাট ও হামলার ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে প্রতিবেদন জমা দেন।
ভুক্তভোগী কাজী ফারুক বলেন, এস আই সোহাগ আসামীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে আমার মামলার মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়েছে। তিনি তদন্তে বলেছেন, ৪ তারিখে বাদির বাড়িতে গিয়ে তাদের জমি সংক্রান্ত বিষয়ে সমস্যা সমাধানের পরামর্শ দিই। কিন্তু ওইদিন আমি ও আমার ছোট বোন ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। ভর্তির কাগজও আমার কাছে রয়েছে। এছাড়া আমার বোনের মামলায় এস আই শামিম হোসেন তাহলে কিভাবে ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন। আমি এই দুর্নীতিবাজ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত এস আই সোহাগ হোসেনের সাথে প্রতিবেদক যোগাযোগ করার চেষ্টা করতে চাইলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শাহীন উদ্দিন বলেন, যেহেতু দুটি মামলার তদন্ত দুই কর্মকর্তা করেছেন। সেহেতু যে যা তদন্ত করে পেয়েছেন তাই রিপোর্ট দিয়েছেন। যদি বাদীর আপত্তি থাকে তাহলে নারাজি দিলে নতুন করে তদন্ত হবে।