ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার আসামি শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধারে ঝিনাইদহে অভিযান চালাচ্ছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের তদন্তকারী একটি টিম।
বুধবার (২৬ জুন) সকাল থেকে শহরের পায়রা চত্ত্বরে গাঙ্গুলী মিষ্টান্ন ভান্ডারের পেছনের একটি পুকুর ঘিরে রাখে পুলিশ। সেখানে ক্রাইম সিন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করে রাখা হয়েছে। একজন ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন। ঢাকা থেকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমানসহ ১০ ডিবি সদস্য এসেছেন। এছাড়া ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশিদ হেলিকপ্টার যোগে ঝিনাইদহে এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন। ইতিমধ্যে কয়েকজন জেলেকে পুকুরে নামিয়ে মোবাইল উদ্ধারের চেষ্টা করা হলেও তা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঝিনাইদহ গোয়েন্দা পুলিশের ওসি জুয়েল ইসলাম।
ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন উদ্দিন জানান, সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে পুকুরে মোবাইল উদ্ধারের জন্য ঝিনাইদহ কারাগার থেকে ঘটনাস্থলে আনা হয় আওয়ামী লীগ নেতা কাজী কামাল আহমেদ বাবুকে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটের দিকে কাশিমপুর কারাগার থেকে ঝিনাইদহ কারাগারে স্থানান্তর করা হয় তাকে।
এদিকে সকাল থেকে ঝিনাইদহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মোবাইল উদ্ধার না হলে অভিযান অব্যাহত থাকবে কি না বা পরবর্তীতে অন্য কোন পদক্ষেপ নেওয়া হবে কিনা মিডিয়ার সামনে তা জানান হয়নি। তবে মোবাইল উদ্ধারের কাজে ফায়ার সার্ভিস ও ডুবুরি দল প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এর আগে মঙ্গলবার (২৫ জুন) দুপুরে ঢাকার মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন অর রশিদ বলেছিলেন, এই মোবাইলগুলো দিয়েই আনার হত্যার মূল ঘাতক আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া গ্যাস বাবুর সঙ্গে অসংখ্যবার কথা বলেছেন। এছাড়া, অসংখ্য মেসেজ তারা আদান-প্রদান করেছেন। মোবাইলগুলোতে ডিজিটাল তথ্য-উপাত্ত আছে বলে মনে করছি। না হলে গ্যাস বাবু মোবাইলগুলো পানিতে ফেলে দেবেন কেন? মোবাইলগুলো পেলে মামলার তদন্তে অনেক সহায়তা হবে। সেজন্য মোবাইল উদ্ধার করা অনেক জরুরি।
প্রসঙ্গত গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে ভারতে যান এমপি আনার। ওঠেন পশ্চিমবঙ্গে বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে। পরের দিন চিকিৎসক দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকে নিখোঁজ হন আনোয়ারুল আজীম। এর পাঁচ দিন পর গত ১৮ মে বরাহনগর থানায় আনোয়ারুল আজীম নিখোঁজের বিষয়ে একটি জিডি করেন বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। গত ২২ মে হঠাৎ খবর ছড়ায়, কলকাতার পার্শ্ববর্তী নিউটাউন এলাকায় সঞ্জীভা গার্ডেনস নামে একটি আবাসিক ভবনের বিইউ ৫৬ নম্বর রুমে আনোয়ারুল আজীম খুন হয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত তার মরদেহ সনাক্ত করা যায়নি।