ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ১০নং হরিশংকরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খন্দকার ফারুকুজ্জামান ফরিদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। ধর্ষন মামলায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান
ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো ৬ মাসের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়।
মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুরে ঝিনাইদহের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোঃ মিজানুর রহমান এ রায় প্রদান করেন। ফরিদ নরহরিদ্রা গ্রামের খোন্দকার আমিরুজ্জামানের ছেলে। তিনি বর্তমানে ঝিনাইদহ শহরের ধোপাঘাটা গোবিন্দপুর এলাকায় স্থায়ী ভাবে বসবাস করেন।
মামলা সুত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১৫ এপ্রিল খন্দকার ফারুকুজ্জামান ফরিদ তার নির্বাচনী এলাকায় গ্রামের বাড়িতে এক নারীকে নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করিয়ে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনায় ১৯ এপ্রিল ঐ নারী বাদী হয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। মামলা থেকে বাঁচতে ঐ নারীকে বিয়ে করে আবার একই টেবিলে বসে তালাকও দেন তিনি। ধর্ষিতা ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পাগলা কানাই ইউনিয়নের বাসিন্দা।
এদিকে ধর্ষন মামলার পর ফারুকুজ্জামান ফরিদ উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে হরিশংকরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে থাকেন। ২০২২ সালের ১৬ এপ্রিল খন্দকার ফারুকুজ্জামান ফরিদকে সাময়িক বহিষ্কার করে প্রজ্ঞাপন জারি করেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমিন প্রধান।
ঝিনাইদহের আদালত মামলাটি অধিকতর তদেন্তর জন্য ডিএনএ টেষ্ট করার জন্য ঢাকায় পাঠায়। ডিএনএ টেষ্টে ফরিদ চেয়ারম্যানের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা আ’লীগ তাকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে সাময়িক বহিস্কার করেন।
বিজ্ঞ আদালত সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২০০০ এর ৯(১) ধারায় অভিযোগ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমানিত হওয়ায় তাকে দোষি সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও পাঁচ লাখ টাকা জরিামনা এবং অনাদায়ে আরো ৬ মাসের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।
এই মামলায় ফরিদের গাড়িচালক একই ইউনিয়নের হুদা বাকড়ী গ্রামের ইউনুস মুন্সির ছেলে নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে দোষ প্রমানিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করেছে। রাষ্ট্র পক্ষে এ্যাড. বজলুর রহমান ও আসামী পক্ষে এ্যাডভোকেট নেকবার আলী মামলাটি পরিচালনা করেন।