ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-
ঝিনাইদহে প্রবাসীর স্ত্রীর আত্মহত্যা নিয়ে জনমনে প্রস্ন দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় প্রবাসী নিজাম উদ্দিনের দুঃসম্পর্কের মামা এবং তার স্ত্রীর সার্বক্ষনিক খোঁজ খবর নেওয়া এক পল্লি চিকিৎসকের দিকে সবাই আঙ্গুল তুলছেন। জানা গেছে, জেলার শৈলকূপা উপজেলার আবাইপুর গ্রামের সৌদি প্রবাসী নিজাম উদ্দিনের স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে জেলা শহরের মহিলা কলেজ পাড়ার একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। গত মাস তিনেক আগে বাসাটি ভাড়া করে দিয়েছিলেন প্রবাসীর ঐ দুঃসম্পর্কের মামা মুক্তার হোসেন। এরপর থেকে প্রবাসীর স্ত্রী সোনিয়াকে (৩৩) বাজার করাসহ পারিবারিক চিকিৎসার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন মুক্তার হোসেন। পল্লি চিকিৎসক মুক্তার হোসেন প্রবাসীর পার্শ্ববর্তী এলাকা লক্ষন্দিয়া গ্রামের বাসিন্দা। প্রবাসী নিজাম উদ্দিনের ৮ বছরের ছেলে মোঃ হাসান সাংবাদিকদের জানান, তার মা ঘটনার রাতে বলেছিল যে, ডাক্তার আংকেল আজ রাতে মাকে সেলাইন দিবে। হাসান বলেন, রাত ৪ টার দিকে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলে মায়ের সেলাইন কতটুকু গিয়েছে তা দেখতে রুমে যেয়ে দেখি জানালার সাথে গলায় উড়না পেঁচিয়ে মা ঝুলে রয়েছে। সেসময় দ্রুত রান্না ঘর থেকে বটি এনে উড়না কেটে ফেলি এবং চিৎকার দিই। তবে ডাক্তার আংকেল রাতে এসেছিল কি না আমি দেখিনি। গত শুক্রবার দিবাগত রাতের শেষের দিকে ঝিনাইদহ শহরের কালিকাপুর মহিলা কলেজ পাড়ার অবসরপ্রাপ্ত এসআই সিরাজের দুইতলা বাড়ির নিচের তলার একটি ফ্লাটে এ ঘটনা ঘটে। স্থানিয়রা জানান, মাঝে মাঝেই ঐ ডাক্তারকে এই মহিলার রুমে আসতে যেতে দেখা গেছে। তারা জানান, প্রবাসীর স্ত্রীর মামা শশুর পরিচয়েই এখানে যাওয়া আসা করতো ঐ ডাক্তার। প্রবাসীর স্বজনরা জানান, আমরা আপনজন হলেও আমাদের সাথে কোন সম্পর্ক ছিলনা। ডাক্তার মুক্তার হোসেনই তাদের সমস্ত খোঁজ খবর রাখতো। তারা বলেন, আপনারা সাংবাদিক এর থেকে আর কি ভেঙ্গে বলা লাগে ? পরকীয়ার জের ধরেই এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলে স্বজনদের ইঙ্গিতে ধারনা করছেন স্থানীয়রা। তারা ধারনা করে বলেন, ঐ ডাক্তারের আটক করে কল লিস্ট চেক করাসহ জিজ্ঞাসাবাদ করলেই এই মৃত্যুর আসল রহস্য উদ্ঘাটন হতে পারে। এ বিষয়ে পল্লী ডাক্তার মুক্তার হোসেন ঘটনার রাতে আসার কথা অস্বীকার করলেও তার আগের দিন বেলা তিনটার দিকে অসুস্থ্যতাজনিত বিষয়ে সোনিয়ার সাথে ফোনে কথা হয়েছিল বলে তিনি জানান। সর্বশেষ তিনি গত রোববার বাসা চেঞ্জ করার বিষয়ে আলাপ করতে সোনিয়ার সাথে দেখা করতে এসেছিলেন বলেও তিনি জানিয়েছেন। প্রবাসী নিজাম উদ্দিন জানান, আমি সোনিয়ার সাথে সম্পর্ক করে বিয়ে করছিলাম। সোনিয়া আমাকে অনেক ভালো বাসতো আমিও সোনিয়াকে অনেক ভালো বাসি। তিনি বলেন, সোনিয়া অসুস্থ্য ছিল, যে কারনে আমার দুঃসম্পর্কের মামা চিকিৎসক মুক্তার হোসেনকে সার্বিক দেখাশুনা করতে বলেছিলাম। প্রবাসী বলেন, সোনিয়া আত্মহত্যা করার মত কোন কারণ আমার জানা নেই, তবে কিছু কথা আমার কানে আসছে যা আমার মনে সন্দেহ সৃষ্টি করছে। ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি আব্দুল্লা আল মামুন জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে। পরিবার থেকে অভিযোগ আসলে তদন্ত করে ব্যবস্থ্যা নেওয়া হবে।