ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-
ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও প্রয়োজনীয় মালামাল ভাঙচুরের মামলায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৬।
এরা হচ্ছে, শহর সংলগ্ন খাজুরা জর্দ্দার পাড়ার মৃত রমজান আলী জর্দ্দারের ছেলে তোবারক হোসেন টোনা জর্দ্দার (৬৯), সদর উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের সামু’র ছেলে মনিরুল (৪৫), মধুহাটি গ্রামের মৃত সোলায়মানের ছেলে চান মিয়া (৩৮) এবং শহরের হামদহ মোল্যাপাড়ার টেনিয়া (৪০)।
গত (৪ আগষ্ট) বিকাল ৫টার দিকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করাসহ বিএনপির নেতা কর্মীদের খুন জখম করার উদ্দেশ্যে দলবদ্ধ ভাবে তারা ছুটে যায়। এসময় তাদের হাতে থাকা আগ্নেয় অস্ত্র, গান পাউডার, পেট্রোল বোমা, ককটেল বোমা, ঢাল-সড়কি সহ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র এ কান্ড ঘটায়। এতে দলটির প্রায় ৫০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। এমনটিই তথ্য দিয়ে র্যাব এক বার্তায় সাংবাদিকদের জানান।
ঘটনার বিবরণীতে র্যাব আরো জানান, আসামিরা জোটবদ্ধ হয়ে ঝিনাইদহ শহরে ত্রাশের রাজত্ব কায়েম করার উদ্দেশ্যে বেপরোয়া ভাবে মিছিল বের করে। এসময় শহরের ওয়াজির আলী স্কুল এন্ড কলেজের বিপরীতে থাকা জেলা বিএনপি অফিস ঘেরাও করে। সেসময় বাদীসহ স্বাক্ষীগন প্রানের ভয়ে বিকল্প পথে অফিস থেকে বের হয়ে নিরাপদ স্থানে চলে যায়। কার্যালয়ের মধ্যে কেউ না থাকায় আসামীগন তাদের কাছে থাকা “বোমা” কার্যালয়ের মেইন গেইট লক্ষ্য করে ছুড়ে মারে। এছাড়াও মেইন গেট ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে ল্যাপটপ, কম্পিউটার, এসিসহ কার্যালয়ের সকল দ্রব্য সামগ্রী ভাংচুর করে। এতেও ক্ষান্ত না হয়ে তাদের কাছে থাকা গান পাউডার, পেট্রোল দিয়ে সমস্ত ভাংচুরকৃত দ্রব্য সামগ্রীর উপর ছিটিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। আগুন দেওয়া মাত্রই মুহুর্তের মধ্যেই সমস্ত অফিস জুড়ে আগুন লেগে দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে। তখন বাদী ও স্বাক্ষীরাসহ উপস্থিত স্থানীয় লোকজন আগুন নিভানোর জন্য আগাইয়া গেলে আসামীরা বাদী ও স্বাক্ষীদের খুন জখম করার জন্য তাড়া করে। তাদের ধরতে না পারায় পরবর্তীতে খুন জখম করবে বলে হুমকী দেয়। পরে আগুন নিভানোর জন্য ফায়ার সার্ভিস অফিসে সংবাদ দিলে ফায়ার সার্ভিস অফিসের গাড়ি আগুন নিভানোর জন্য গেলে তারা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি পথিমধ্যে আটকিয়ে দেয়। এতে করে অফিসের ভিতরে থাকা ল্যাপটপ, কম্পিউটার, এসিসহ সকল দ্রব্য সামগ্রী পুড়ে আনুমানিক ৫০ লক্ষাধিক টাকা ক্ষতিসাধন হয়। এঘটনায় গত ১৯ আগষ্ট ৪৫৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত নামা আরও ৬,৭’শ জনকে আসামি করে ঝিনাইদহ সদর থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইন ও পেনাল কোড আইনে মামলা দায়ের করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। মামলার পর আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ঝিনাইদহ র্যাব-৬ গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রাখে।
এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (২৭ আগষ্ট) র্যাব-৬ গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে যে, এ মামলার পলাতক আসামীগন ঝিনাইদহ সদরের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনার সত্যতা যাচাই ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের উদ্দেশ্যে তাৎক্ষণিক সেখানে অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার পূর্বক ঝিনাইদহ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়।