ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ঝিনাইদহে জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ লেফটেন্যান্ট শেখ জামালের ৭০ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ঝিনাইদহ পায়রা চত্বরের খোকা মিয়ার পাম্পের সামনে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঝিনাইদহ সদর উপজেলা শাখার পক্ষ থেকে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এতে সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ওহিদুজ্জামান উজ্জলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা সিটি’র সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, সাবেক পৌর মেয়র ও বর্তমান ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহ সভাপতি তৈয়ব আলী জোয়ারদার, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আনিচুর রহমান খোকা, প্রচার সম্পাদক মন্জুর পারভেজ তুষার, ক্রিড়া বিষয়ক সম্পাদক বিকাশ ঘোষ, সাবেক জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আহাদুর রহমান খোকন, সাবেক জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও বর্তমান জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য সচিব রানা হামিদসহ আওয়ামীলীগের অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীবৃন্দ।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সাইদুল করিম মিন্টু তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অফিসার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ জামাল ১৯৫৪ সালের ২৮ এপ্রিল গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে শেখ জামালও গৃহবন্দি ছিলেন। সেখান থেকে পালিয়ে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখসমরে নেতৃত্ব দেন। শেখ জামাল ধানমন্ডি থেকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ পথচলা শেষে ভারতের আগরতলা পৌঁছান এবং সেখানে মুজিব বাহিনীতে যোগদান করেন। প্রশিক্ষণ শেষে মুক্তিযুদ্ধের ৯ নম্বর সেক্টরে সম্মুখসমরে অংশগ্রহণ করেন।
তিনি বলেন, শেখ জামাল ছিলেন লং কোর্সের প্রথম ব্যাচের কমিশন্ড অফিসার। ১৯৭৪ সালে শেখ জামাল যুগোস্লাভিয়ার মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে ক্যাডেট হিসেবে প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে অংশগ্রহণ করেন। এরপর ব্রিটেনের স্যান্ডহার্স্ট অ্যাকাডেমি থেকে প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফিরে ঢাকা সেনানিবাসে দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট পদে যোগদান করেন।
তিনি আরও বলেন, দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গলে চাকরিকালে স্বল্প সময়েই অফিসার ও সৈনিকদের মাঝে তিনি অসাধারণ পেশাগত দক্ষতা ও আন্তরিকতার ছাপ রেখেছিলেন। কয়েক সপ্তাহেই শেখ জামাল অফিসার ও সৈনিকদের মাঝে তাদেরই একজন হয়ে যান। ট্রেনিং গ্রাউন্ডে, রণকৌশলের ক্লাসে, অবস্টাকল ক্রসিংয়ে অংশ নিয়ে সৈনিকদের মুগ্ধ করেন। ব্যাটালিয়ন বক্সিং টিমের সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেন তিনি।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৪ আগস্ট ব্যাটালিয়ন ডিউটি অফিসার হিসেবে ক্যান্টনমেন্টে নিজ দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ওই দিন রাতে ক্যান্টনমেন্ট থেকে ফিরে আসেন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালোরাতে ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাতে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে নিহত হন শেখ জামাল।
আলোচনা শেষে, তার পবিত্র আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল ও মোনাজাত করেন কেসি কলেজ মসজিদের ইমাম।