ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-
ঝিনাইদহ জেলা কারাগারে কর্মরত শোভনা নামে এক কারা রক্ষীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। বুধবার দুপুরে জেলা শহর থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার পশ্চিমে রাউতাইল নামক স্থানের ভাড়া বাসা থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মৃতদেহ উদ্ধার করে প্রতিবেশীরা।
জানা গেছে, বুধবার দুপুর দুইটার দিকে তার ডিউটি ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হয়ে আরো আধাঘণ্টা লেট হলেও তিনি অফিসে না আসায়, অফিস থেকে তাকে ফোন করা হয়। একাধিক বার ফোন দেওয়ার পরও রিসিভ না করায়, একপর্যায় একই ফ্লাটে থাকা আনিচুর রহমান নামে তার এক সহকর্মী বাসায় খোঁজ নিতে আসে।
শোভনার সহকর্মী আনিচুর রহমান জানান, বাসায় খোঁজ নিতে এসে দেখি তার রুমে ফেতর থেকে দরজা লাগানো। তিনি বলেন, বারবার ডেকে সাড়া না পেয়ে, বাসা মালিক ওমর আলীকে ডেকে নিয়ে সাফল দিয়ে দরজা ভেঙে দেখি সিলিং ফ্যানের রডের সাথে গলায় গামছা পেঁচিয়ে ঝুলে আছে শোভনা। এসময় ঝুলন্ত অবস্থা থেকে দ্রুত নামিয়ে শোভনাকে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা দেন।
এদিকে শোভনার স্বামী মাসুদ জানান, আমার স্ত্রীর মাথার ব্রেনে সমস্যা ছিল। বিভিন্ন সময় ফোনে খোঁজ নিতে চাইলেও আমাকে সহ্য হয়না বলে ফোন না দেওয়ার জন্য বলতো। তিনি বলেন, আমি আনসার ভিডিপিতে চাকরি করি। বর্তমানে আমার পোষ্টিং ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায়। সেখানে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ডিউটি করি। গত এক মাস আগে স্ত্রী শোভনার সাথে আমার সাক্ষাৎ হয়েছে। এরপর সে কোন অবস্থায় ছিল আমি জানিনা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কারারক্ষী শোভনার দুটি ছেলে মেয়ে আছে। ছেলে মেয়ে দুটি কুষ্টিয়া জেলার ইবি থানায় কোন এক গ্রামে তাদের নানা বাড়িতে থাকেন। চাকরির সুবাদে এখানে তিনি একাই থাকতেন।
এদিকে শোভনার স্বামী মাসুদ তার স্ত্রীর ব্রেনে সমস্যা আছে বলে জানালেও এমন অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেনি প্রতিবেশী ও একই ফ্লাটে থাকা সহকর্মী আনিচুর রহমানের স্ত্রী। তারা বলেন, শোভনা দীর্ঘ ১ বছরেরও বেশি জেলখানায় চাকরির সুবাদে এখানে ভাড়া থাকেন। তার ব্রেনে সমস্যা আছে এমন কোন উপসর্গ আমাদের চোখে পড়েনি। তারা বলেন, শোভনার স্বামীর সাথে বনিবনা হয়না একথা শোভনার কাছ থেকেই তারা শুনেছেন। তবে কেনো তার স্বামীর সাথে সম্পর্কের অবনতি ছিল এবিষয়ে তারা কোন ব্যাক্ষা দেননি।
এবিষয়ে জেল সুপারের বক্তব্য নিতে জেলা কারাগারে গেলে, তিনি সময় দিতে না পারায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।