ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় জুয়ার আসরে অভিযান চালানোই পুলিশের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে মন্দিরের মূর্তি ভাঙচুর করে উপজেলার ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমানের ছেলে দিনার। গত ৬ অক্টোবর উপজেলার ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের লাঙ্গলবাঁধ গড়াই নদীতে চেয়ারম্যানের ছেলে দিনারের জুয়ার আসরে পুলিশ অভিযান চালালে তিনি পুলিশের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে এ ঘটনা ঘটায়। এঘটনার পরের দিন মন্দিরের সভাপতি সুকুমার মন্ডল শৈলকুপা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনাটি বাংলাদেশী বিভিন্ন গনমাধ্যম সহ আন্তর্জাতিক গনমাধ্যমে ফলাও করে প্রকাশিত হলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে এবং তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। রোববার (১৬ অক্টোবর) ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, ঘটনায় জড়িতদের সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার জন্য তাৎক্ষণিক সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল ঝিনাইদহের একটি চৌকস টিমকে ঘটনাস্থলে পাঠাই এবং ছায়া তদন্তে নিয়োজিত রাখি। তিনি বলেন, তদন্ত টিমটি ঘটনার সাথে জড়িতদের সনাক্ত করে এবং ১২ অক্টোবর শৈলকুপা থানা পুলিশের সহায়তায় ঐ ইউনিয়নের কুশবাড়িয়া গ্রামের এস এম আরব আলী খানের ছেলে আসাদুজ্জামান হিরোকে গ্রেফতার পূর্বক বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিজ্ঞ আদালত আসামিকে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পুলিশের নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী আসাদুজ্জামান হিরো জানায়, গত ৬ অক্টোবর ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমানের ছেলে দিনার হোসেন ও জিনারুল লাঙ্গলবাঁধ গড়াই নদীতে ১৫/১৬ জন মেয়ে দিয়ে অশ্লীল নাচ গান ও জুয়া খেলার আয়োজন করে। ঐ স্থানে পুলিশ অভিযান চালিয়ে জুয়া খেলার সরঞ্জামাদিসহ ২টি ট্রলার আটক করে। এতে তাদের মোটা অংকের টাকা লোকসান হয়। যে কারণে পুলিশের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ঐদিন রাত আনুমানিক ১১ টার দিকে চেয়ারম্যানের ছেলে দিনার আসামিদের ডেকে ডাউটিয়া গ্রামের মন্দিরের মূর্তি ভাঙ্গার পরিকল্পনা করে। পরে দিনারের নির্দেশে আসাদুজ্জামান হিরোসহ কুশবাড়িয়া গ্রামের পাঞ্জাবী আলি খানের ছেলে তুষার (৩৩) ও আমজাদ হোসেনের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন (৩৩) মন্দিরের কালি মূর্তির মাথা ভেঙ্গে মন্দিরের সাধারণ সম্পাদকের বাড়ির তিন রাস্তার মোড়ে ফেলে রেখে যায়।
পুলিশ সুপার আশিকুর রহমান প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও জানান, আসামীর স্বীকারোক্তি মোতাবেক এ ঘটনায় জড়িত ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী আসাদুজ্জামান দিদারকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রাখা হয়েছে এবং মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে।