ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বামোনাইল গ্রাম হতে নাটোপাড়া গ্রামীণ রাস্তার দু’ধার দিয়ে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যকে মুগ্ধ করতে তিল তিল করে বেড়ে উঠেছিল বেশ কিছু খেজুর গাছ। সমাজের কিছু অসাধু কাঠ ব্যবসায়ীর চক্রে পড়ে রাস্তার পাশে থাকা ফসলী জমির দোহাই দিয়ে অবশেষে খেজুর গাছগুলো কেটে সাবাড় করে দেওয়া হচ্ছে । এতে ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকার সচেতন মহল। তারা জানান, এলাকার প্রভাবশালী একটি মহল সরকারি রাস্তার পাশে বেড়ে উঠা খেজুর গাছ গুলি ফসলী জমি ক্ষতির দোহাই দিয়ে গোপনে বিক্রি করে দিচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একশ্রেণীর অসাধু কাঠ ব্যাবসায়ীরা রাস্তার পাশের জমির মালিকদের সাথে যোগসাজশ করে এ গাছগুলো কেটে তারা ইট ভাটায় বিক্রি করছে।সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, স্থানীয় ঝিথড় গ্রামের সাইফুল নামে এক কাঠ ব্যবসায়ী ১০ থেকে ১২ জন শ্রমিক লাগিয়ে খেজুর গাছগুলো কাটছেন। কাঠ ব্যবসায়ী সাইফুল জানান, এই কাঁচা রাস্তাটি পাকা করণ করা হবে মর্মে তিনি রাস্তাটির টেন্ডার হওয়ার কথা শুনেছেন। যে কারণে রাস্তার পাশের জমির মালিকেরাই গাছগুলো বিক্রি করে দিচ্ছেন। তিনি বলেন, আপনারা জমির মালিকের সাথে কথা বলেন আমার সাথে কথা বলে কোন লাভ নেই।
এদিকে রিয়াজ উদ্দিন নামে রাস্তার পাশের এক জমির মালিক জানান, গাছগুলো সরকারি রাস্তার পাশে হলেও গাছের ডালপালা পড়ে তার ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। মে কারণে ফসল বাঁচাতে হলে গাছ কেটে ফেলা ছাড়া তার আর কোন উপায় নেই। তবে খেজুর গাছ বিক্রি করা অন্য দুইজন জমির মালিক, আহমেদ এবং বিধানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
এদিকে রাস্তার পাশের খেজুর গাছ বিক্রির বিষয়ে এলাকার একাধিক স্কুল, কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, খেজুর গাছ পরিবেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করে। তাছাড়া গরমের মৌসুমে তিব্র রোদের তাপ থেকে পথচারীরা অনেকটাই স্বস্তি ফিরে পায়। পাখিরা নীড় বানানোর সুযোগ পায় বাসা বেঁধে। মূলত গ্রামীণ রাস্তার পাশের এই গাছ গুলো ছিল প্রকৃতির সম্পদ। যা কেটে ফেলানোর কারণে প্রকৃতির সুফল ভোগ করা থেকে মানুষ বঞ্চিত হলো।
ফুরসন্দি ইউনিয়নের উপ-সহকারি ভূমি কর্মকর্তা শংকর কুমার বিশ্বাস জানান, সরকারের টেন্ডার ছাড়া রাস্তার গাছ কাটা আইনগত অপরাধ। তিনি বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছ গুলো জব্দ করার ব্যাবস্থা নিয়েছি। দ্রুত আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শারমিন আক্তার সুমি ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া জেরিনকে মুঠোফোনে জানানো হলে, বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নিবে বলে জানান।