অনলাইন ডেস্ক-
মুখ থুবড়ে পড়ল স্যোশাল আর ডিজিটাল মিডিয়ার তৈরী শৈলকুপার সেই উদ্ভট ‘রসগোল্লা চা’! ব্যতিক্রমী চায়ের বদলে সবাই ফিরছে মিষ্টি খেয়ে। যারা খাচ্ছেন তারা ফিরছেন টিকা-টিপ্পনী আর হতাশা নিয়ে।
শৈলকুপার ‘রসগোল্লা চা’ কি আসলেই সুস্বাদু! ‘রসগোল্লা দিয়ে চা! এ যেন স্বাদে টইটম্বুর। দেখলেই যেন খেতে ইচ্ছে করে’। গত কয়েকদিন ধরে রসগোল্লা চায়ের এমন অসংখ্য ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ ও ডিজিটাল মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তা দেখে অনেকেই ছুটছেন সে চায়ের দোকানে। কিন্তু সেখানে গিয়ে হতাশ হচ্ছেন চা প্রেমীরা। তাদের অভিযোগ, এ চা ফেসবুকেই সুস্বাদু, বাস্তবে যাচ্ছেতাই!
জানা গেছে, ঝিনাইদহের শৈলকুপার কাতলাগাড়ী বাজারে শুভ ইশান হুজাইফা নামে চায়ের দোকানে গত কয়েকদিন যাবত বিক্রি শুরু করেছেন রসগোল্লা দিয়ে চা, যার নাম দেয়া হয়েছে দাদা-বৌদির রসগোল্লা চা।
দুধ আর চা দিয়ে তার মধ্যে ছেড়ে দিচ্ছেন স্থানীয়ভাবে তৈরি একটি রসগোল্লা। এতেই যেন বেড়ে যাচ্ছে স্বাদ। দামও হাঁকাচ্ছেন ৮০ টাকা। যেখানে চায়ের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া দুষ্কর। সেই সঙ্গে নিম্নমানের রসগোল্লা দিয়ে চা তৈরি করায় যাচ্ছেতাই স্বাদ পাচ্ছেন চা প্রেমীরা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সম্প্রতি ভিউ ব্যবসায়ী কিছু ইউটিউবার এ চায়ের সুনাম করে ভিডিও দিচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এতেই সেখানে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন চা প্রেমীরা। কিন্তু চায় নিম্নমানের হওয়ায় হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন তারা।
চা খেতে আসা এক নারী বলেন, ‘ফেসবুকে দেখে স্বামীর সঙ্গে এখানে চা খেতে এলাম। ভাবলাম একটু ঘোরাও হবে চা খাওয়াও হবে। কিন্তু এখানে এসে এ চা খেয়ে খুব হতাশ হলাম। রসগোল্লাটা খুবই নিম্নমানের। আর চায়ের তেমন স্বাদই নেই। যেন শরবত খাচ্ছি। চায়ের দাম নিচ্ছে ৮০ টাকা। চায়ের নামে পুরোটা প্রতারণা।’
কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে আসা রিপন নামে এক যুবক বলেন, ‘ফেসবুকে দেখে বন্ধুদের সঙ্গে চা খেতে এলাম। এসে দেখি দোকানদার তো খুব ব্যস্ত। রসগোল্লা চা দিলেন আধা ঘণ্টা পরে। কিন্তু চায়ের কোনো স্বাদ পেলাম না। নামেই শুনেছি রসগোল্লা চা। এর চেয়ে শরবত খাওয়া ভালো।
আর এই দোকানদার এই চায়ের নাম করে দুধ চা বিক্রি করছে। রসগোল্লা চা চাইলে দেরিতে দিচ্ছে। অনেকে ফিরে যাচ্ছে। যারা আসছেন তাদের দুধ চা খেতে হচ্ছে। তারপরও দুধ চা যেন দুধ আর চিনি দিয়ে জালানো। চায়ের কোনো স্বাদ নেই।’
স্থানীয় যুবক রাইদুল বলেন, ‘এর আগেও এ দোকানে নানা পদের চা বিক্রি করা হত। কিন্তু বেশিদিন ধরে সেসব চলে না। কিছুদিন পরপর ক্রেতাদের আকর্ষণ করতে নতুন নতুন কৌশল নেন চা দোকানি খাইরুল। তাই বলব, যারা দূর-দূরান্ত থেকে চা খেতে আসবেন একটু খোঁজ-খবর নিয়ে আসবেন।’
এ বিষয়ে কাতলাগাড়ী বাজারের সেই চা দোকানি খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘খুব ব্যস্ততা চলছে আমাদের। আগুনের জিনিস। স্বাদ একটু এদিক সেদিক হতেই পারে।’
প্রসঙ্গত, গত প্রায় ১মাস ধরে শৈলকুপার কাতলাগাড়ী বাজারে হঠাৎ এই চা বানাতে শুরু করেন দোকানী । এরপর সপ্তাহ না পেরুতেই, স্থানীয়রা জানার আগেই এটির প্রচারণা ছড়িয়ে দেয়া হয় স্যােশাল মিডিয়াতে। এরপর থেকে সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়তে শুরু করেছে এই রসগোল্লা চা খেতে তবে ফিরছে হতাশা নিয়ে।