শৈলকুপায় কলেজ শিক্ষকের অনৈতিক কার্যকলাপের স্বীকার কিশোরী ভাতিজি! থানায় মামলা

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ওয়াদুদ রহমান (৪৮) নামে এক কলেজ শিক্ষকের বিরুদ্ধে আপন ছোট ভায়ের প্রতিবন্ধী কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর শৈলকুপা থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগীর ভাষ্যমতে জানা গেছে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টার দিকে পার্শ্ববর্তী দর্জী বাড়ি থেকে বাসায় ফিরছিলো ভুক্তভোগী ঐ কিশোরী। এসময় তার বড় চাচা ওয়াদুদ রহমানের বাড়ির গেটের সামনে পৌছালে, ঐ কিশোরীকে কাজে সহায়তা নেয়ার জন্য তিনি বাড়ির মধ্যে ডেকে নিয়ে যান। এরপর মেয়েটির মুখে ওড়না দিয়ে বেঁধে ধর্ষণ করেন তিনি। পরে মেয়েটিকে বাড়িতে না পেয়ে তার মা ডাকাডাকি করতে থাকলে, ওয়াদুদ রহমান তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে গেট দিয়ে বের করে দেয়। এরপর মেয়েটি দৌড়ে বাড়িতে এসে তার মায়ের কাছে ঘটনা খুলে বললে, চিকিৎসার জন্য শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এসময় তার সাথে ঐ কিশোরীর ফুপু ও ফুপাতো বোন ছিলেন। এর আগেও ওয়াদুদ রহমান ঐ কিশোরীর সাথে দুইদিন অনৈতিক কার্যকলাপ চালিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে খবর পেয়ে ঘটনার ধামাচাপা দিতে উঠে পড়ে লাগেন ওয়াদুদের স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা ও ছোট ভাই লিটন। শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক আলামত দেখে কিশোরীকে নিয়ে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দিলে, রাজিয়া সুলতানা ও লিটন তাদের সাথেই ঝিনাইদহ যান। এমনি অভিযোগ করে ধর্ষনের স্বীকার ঐ কিশোরীর মা আরো জানান, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে গেলে তারা পুলিশ কেস বলে জানান। এরপর আমার মেয়েকে মেডিকেল করতে না দিয়ে ফুঁসলিয়ে বাড়িতে নিয়ে এসে অন্তত ১০/১২ দিন গৃহবন্দী করে রাখে তারা। তিনি বলেন, আমি যাতে কারো সাথে যোগাযোগ করতে না পারি এজন্য মোবাইলও কেড়ে নেয় বাড়ির লোকজন। তাছাড়া দীর্ঘদিন পর আলামত নষ্ট হয়ে গেলে ধর্ষন প্রমাণ করা সম্ভব হবে না, মেয়েসহ আমাকে গৃহবন্দী করা ও মেয়েকে মেডিকেল করতে না দেয়ার পেছনে এটাই ছিল তাদের মূল পরিকল্পনা। পরে খবর পেয়ে ঐ কিশোরীর নানা বাড়ি মাগুরা থেকে লোক এসে কৌশলে কিশোরীকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে এসে কিশোরীর মা বাদী হয়ে শৈলকুপা থানায় ওয়াদুদের বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা করেন। এরপর থেকে ওয়াদুদ রহমান ফোন বন্ধ রেখে পলাতক রয়েছেন। নেক্কারজনক এ ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে নিন্দার ঝড় বয়ে চলে জনমনে। অভিযুক্ত ওয়াদুদ রহমান কবিরপুরের আব্দুস সালাম শাহ’র বড় ছেলে এবং লাঙ্গল বাঁধ আদিল উদ্দিন কলেজের শিক্ষক।
ঘটনার বিষয়ে শৈলকুপা থানার ওসি জানান, থানায় মামলাটি রুজু করা হয়েছে। ঘটনার দিন কিশোরীর পরনে থাকা কাপড়টি ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য পাঠানো হয়েছে। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো যাবে।
মেয়ের সমতুল্য আপন ভাতিজির সাথে এমন সম্পর্ক কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেনা ভুক্তভোগী পরিবার। মামলার পর বিভিন্ন মাধ্যমে মিমাংসার প্রস্তাব আসলেও বিচারের দাবি তাদের।
লাঙ্গল বাঁধ আদিল উদ্দিন কলেজের প্রিন্সিপাল জনাব রোকনুজ্জামান জানান, ৮নং ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমানের সুপারিশে ওয়াদুদ রহমানের চাকরি হয়। চাকরির পর থেকে তিনি আর প্রতিষ্ঠানে আসেননি। তার বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে ওসি সাহেব তাকে ফোন করেছিলেন।
এঘটনার সত্যতা জানতে অভিযুক্ত ওয়াদুদ রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তার ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top