ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার গাড়াগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে জাল সনদে নিয়োগ দেওয়া গণিতের শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেনের ওপর ওঠা অভিযোগ ধামাচাপা দিতে প্রাক্তন শিক্ষকের তথ্য গোপন করে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সুলতান আলী। বিভিন্ন সময়ে এলাকার লোকজন জাহাঙ্গীর হোসেনের নিয়োগ প্রক্রিয়া অবৈধ বলে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু বারবারই পার পেয়ে যান তিনি। ২০১১ সালের ১৩ নভেম্বর তৎকালীন জেলা শিক্ষা অফিসার এস.এম. ছায়েদুর রহমান জেশিঅঝি-১৩৪৬ নং স্মারকে এমপিও ভুক্তির জন্য মাউশিতে তথ্য প্রেরণ করেন। সেই তথ্য অনুযায়ী গাড়াগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মোঃ আনসার উদ্দিন(ইনডেক্স নং- ১৮৮৭১৮) গণিতের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মোঃ আনসার উদ্দিনের অবসর জনিত শুন্যপদে মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেনকে নিয়োগ দেওয়া হয় ২০১১ সালের ২৩ অক্টোবর। জানাগেছে, জাহাঙ্গীর হোসেনের দাখিলকৃত নিবন্ধন সনদ ছিল জাল। তার দাখিলকৃত নিবন্ধন সনদের রেজি-নং- ৯০০১০৭৩২/২০০৯, রোল নং- ৩১২১১৫০৮, সনদের সিরিয়াল নং- ৯০৯৩৫২ দেখানো হলেও ঝিনাইদহ জেলা রেজিস্ট্রার অফিসে অনুসন্ধান করে এই সিরিয়ালের কোন নিবন্ধন পাওয়া যায়নি। এই বিষয়ে অধিদপ্তরে অভিযোগ দাখিল হলে শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেনের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু প্রধান শিক্ষক মোকলেছুর রহমান মামলা না করে কাগজপত্র জালিয়াতি করে জাহাঙ্গীর হোসেনকে ২০০৪ সালে নিয়োগ দেখান। যখন কোন নিবন্ধনের দরকার হতো না। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন ডিগ্রি পাস করেছেন ২০০৫ সালে। এদিকে প্রাক্তন শিক্ষক আনসার উদ্দিনের তথ্য গোপন করে জাহাঙ্গীর হোসেনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে তদন্তের সত্যতা নিয়ে। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি শামিম হোসেন মোল্লা তদন্তের শুনানিতে লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২০০৪ সালের ১ নভেম্বর থেকে জাহাঙ্গীর হোসেন নিয়োগ পেয়ে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, এই অভিযোগ সত্য নয়। প্রধান শিক্ষক মখলেচুর রহমান বলেন, ২০০৪ সালের ১ নভেম্বর থেকে নিয়োগ পেয়ে বিদ্যালয়ের পাঠদানের সাথে কর্মরত আছে। লিখিত বক্তব্যে জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, তার বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সুলতান আলী তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযোগটি সত্য নয় মর্মে উল্ল্যেখ করেছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তিনি মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়েছেন। তারা দাবি তুলেছেন, ২০০৪ সাল থেকে বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতা যাচাই করলেই আসল সত্য বেরিয়ে আসবে। তাদের দাবি পূণরায় অভিযোগটির তদন্ত করে সত্য উদঘাটন করা হোক।