ঝিনাইদহ প্রতিনিধি –
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতায় ভালো খেলতে নিষেধ অমান্য করায়, কাজল শেখ (১৬) নামে এক কিশোর কে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারী) উপজেলার ভাটই বাজারে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। কাজল শেখ শৈলকুপার ফুলহরি ইউনিয়নের চর গোলক নগর গ্রামের হাসান শেখের ছেলে এবং ফুলহরি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি পরিক্ষার্থী। বর্তমানে সে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। তবে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে রেফার করা হতে পারে বলে চিকিৎসকরা মনে করছেন।
জানা গেছে, এবারের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতায় ফুলহরি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে কাজল সহ ২জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়ে উপজেলা পর্যায় খেলার সুযোগ পায়। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার শৈলকুপা উপজেলায় খেলা করতে যায় কাজল। এসময় প্রতিযোগিতায় বর্ষা নিক্ষেপ, লম্বা দৌড়, উচ্চ লাফসহ চারটি খেলায় প্রথম হয়ে পুরুস্কৃত হয় কাজল। এর মাঝে কাজলের খেলার মান দেখে শৈলকুপার রাকেশ ও সোহেলসহ চার পাঁচ জন যুবক কাজলকে ভালো খেলতে নিষেধ করেন।
ভুক্তভোগী কাজল বলেন, আমার এই প্রতিভাকে জাতীয় ভাবে বিকশিত করার লক্ষ্যে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এর আগেও আমি বিভাগীয় ভাবে খেলে জয়লাভ করেছি। কাজল বলেন, আমি যদি ভালো খেলি তবে তাদের পছন্দের ছেলেরা জেলা পর্যায়ে খেলার সুযোগ পাবে না। তবে তারা আমাকে ভালো খেলতে নিষেধ করলেও আমি তা না শুনে চার চারটি খেলায় প্রথম স্থান অধিকার করেছি। যে কারণে, খেলা শেষে তারা আমার উপর আক্রমণ করতে পারে ভেবে, শৈলকুপা থেকে পালিয়ে বাড়িতে আসি।
এদিকে শৈলকুপা থেকে রাকেশ ও সোহেলের ভয়ে পালিয়ে বাড়িতে আসলেও হঠাৎ সন্ধার দিকে রানা নামে একজন কাজলকে সন্ধার দিকে ফোন করে ভাটই বাজারে দেখা করতে বলে। কাজল বলেন, রানা আমার নিজের এলাকার এবং পরিচিত বড় ভাই। যে কারণে আমি তাকে এ বিষয়ে সন্দেহ মনে না করে ভাটই বাজারে আসি। এসময় ভাটই বাজারে তোতা মিয়ার চায়ের দোকানের কাছে আসলে, কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই রানা আমাকে শৈলকুপায় কেনো ভালো খেলেছি বলে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে ঘাড় বরাবর কোপ দেয়। সেসময় দ্রুত হাত দিয়ে ঠেকাতে গেলে, আমার বাম হাতে বেশ কয়েকটি কোপ লেগে হাত ঝুলে পড়ে। রানা ফুলহরি ইউনিয়নের ভগবান নগর গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে। এবিষয়ে শৈলকুপা থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে ভুক্তভোগী পরিবার জানান।
এদিকে ঘটনার বিষয়ে রানার বাবা কামালের কাছে জানতে চাইলে তিনি ছেলের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রানা আমার ছেলে এখনো পর্যন্ত আমি স্বীকার করছি। কোন উপায়ে যদি আমার ঔরস থেকে ওর নাম কাটার সুযোগ থাকে, তবে সেই চেষ্টাই আমি করছি। এছাড়া রানার বিষয়ে আর কোন কিছু বলতে তিনি ইচ্ছাবোধ করেননি।