ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার নতুন মালিথা গ্রামে (গড়াই নদীর ব্রীজের পাশে) ৫ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে আব্দুল খালেক শেখ (৬০) নামে এক বৃদ্ধের নামে শৈলকুপা থানায় মামলা করা হয়েছ। যার মামলা নং-১৯, জিআর নং- ৬৯/২৪) । গত ১০ মার্চ শিশুটির বাবা বাদি হয়ে এই মামলাটি করেন। আসামি আব্দুল খালেক নতুন ভুক্ত মালিথা গ্রামের মৃত কেসমত শেখের ছেলে।
জানাগেছে, ভুক্তভোগী শিশু ও ধর্ষণকারীর বাড়ি পাশাপাশি। ভুক্তভোগীর বাবা লাঙ্গলবাধ বাজারের একটি হোটেলে কাজ করেন এবং স্ত্রীকে নিয়ে সেখানে একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। ভুক্তভোগী শিশুটি তার গ্রামের বাড়িতে দাদির কাছে থাকে। গত ৪ মার্চ সকাল ১০ টার দিকে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে আব্দুল খালেক ঐ শিশুর কাছে যায় এবং ফুসলিয়ে পাশের একটি ভূট্টা ক্ষেতে নিয়ে ধর্ষণ করে। এসময় ভুক্তভোগী চিৎকার করতে চাইলে মুখ চেপে ধরে। পরে তাকে হুমকি দিয়ে এই কথা কাউকে বলতে নিষেধ করে। কিন্তু অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে শিশুটি তার দাদির কাছে ঘটনা খুলে বলে। এসময় প্রথমে পার্শ্ববর্তী শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪দিন পরে মাগুরা সদর হাসপাতালে ৩ দিন চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে আসে।
এ বিষয়ে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: লিটন জানান, ধর্ষনের শিকার শিশুটি শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছিল। তাকে সেক্সুয়াল আবাউস করা হয়েছে। আমরা ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে রেফার্ড করি তাকে। এদিকে, ঘটনার বিষয়ে জানাজানি হলে, আব্দুল খালেকের চাচাতো ভাই সুক চাঁদ ওরফে কাজী স্থানীয় চাঁদ আলী মেম্বার ও সুজন মেম্বার মিলে ঘটনার বিষয়ে ধামাচাপা দিতে উঠে পড়ে লাগে। বিষয়টি জানতে পেরে বুধবার জেলা থেকে একদল সংবাদকর্মী সরেজমিন গেলে ভুক্তভোগীর বাবা ও দাদি কান্না বিজড়িত কন্ঠে বলেন, আমরা কি আইনের সহযোগিতা পাবো না! ঘটনার বিচার পেতে মামলা করা হলো কিন্তু অভিযুক্ত বাড়িতে থাকলেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছে না। ঘটনার সত্যতা জানতে অভিযুক্ত আব্দুল খালেকের বাড়িতে গিয়ে তার ২ ছেলের স্ত্রীদের সাথে কথা বললে তারা জানান, তার শ্বশুর পেয়াজের ক্ষেতে গেছেন। পেঁয়াজের ক্ষেত অনেক দুর হওয়ায় তাকে খবর দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আব্দুল খালেকের দুইজন স্ত্রী ছিলেন, প্রথম স্ত্রী দুই ছেলে রেখে মারা গেছে প্রায় ৩ বছর আগে। এক ছেলে বিদেশে চাকরি করেন এবং আরেক ছেলে মাগুরার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করে। দ্বিতীয় স্ত্রীও মারা গেছেন।
এদিকে ঘটনা ধামাচাপা দিতে লাঙ্গলবাধ বাজারের বিসমিল্লাহ ইলেকট্রনিক্সের মালিক সুখ চাঁদ ওরফে কাজী চাঁদ আলী মেম্বার ও সুজন মেম্বার মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এঘটনা গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ যাতে না হয়, তা ঠেকানোর কথা বলে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের লেলিয়ে দিয়ে ২৩ হাজার টাকা নিয়েছেন বলেও অনুসন্ধানে উঠে আসে। আসামি বাড়িতে কিভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও লাঙ্গলবাধ থানার আইসি এসআই হামিদুল ইসলাম বলেন, আসামি বাড়িতে আছেন এই কথা সত্য নয়, তিনি পালিয়েছেন। আমি খুলনায় ট্রেনিংয়ে ছিলাম যে কারণে গ্রেফতার করতে পারিনি। তিনি বলেন, আসামিকে দ্রুত গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হবে।