হরিণাকুণ্ডু (ঝিনাইদহ) থেকে রাব্বুল হুসাইন
ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু পৌরসভার মেয়র ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধে পৌর এলাকার পার্বতীপুর বাজারের বিশাল আকারের ২টি সরকারি বাজার শেডের মালামাল কোন প্রকার নিলাম ছাড়াই গোপনে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ রয়েছে, সরকারী মালামাল নিলাম প্রক্রিয়ায় বিক্রির নিয়ম থাকলেও তা অমান্য করে পৌর মেয়র ফারুক হোসেন ও ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুর রাজ্জাক পার্বতীপুর বাজারের পুরাতন শেডের ৭ সহস্রাধিক ইট এবং প্রায় ২ লক্ষাধিক টাকার টিন ও কাঠ স্হানীয় মহির উদ্দীন কসাই নামের একজনের নিকট বিক্রি করা হয়েছে।
জানা গেছে, সরকারের প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে ওই বাজারে আধুনিক সেট নির্মানের দরপত্র আহবান করা হয়। ১৫/২০ দিন আগে কাজ শুরুর পূর্ব মুহুর্তে পুরাতন সেট সরানোর প্রশ্ন আসে। বিষয়টি প্রশাসনকে অবহিত করলে আইন মেনে পৌর মেয়রকে নিলাম করার মৌখিক নির্দেশ দেনইউএনও। কিন্তু মেয়র ফারুক হোসেন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ওয়ার্ড কাউন্সিলর রাজ্জাককে সাথে নিয়ে কোন প্রকার নোটিশ, মাইকিং কিংবা নিলাম বিজ্ঞপ্তি ছাড়ায় কারসাজি করে স্হানীয় মহির উদ্দিনকে সর্বোচ্চ দরদাতা দেখিয়ে তার নিকট পুরাতন ২ টি বাজারশেডের মালামাল বিক্রি করে দেন। বাজারের শত শত মানুষের অভিয়োগ, ঐ দুই শেডের মালামালের মূল্য অন্তত আড়াই লক্ষাধিক টাকার নিচে হবে না। অথচ সরকারী কোষাগারে জমা পড়েছে মাত্র ৪৭ হাজার টাকা। মেয়র ফারুক হোসেন কারসাজির নিলাম দেখিয়ে অন্তত ৪ গুন লাভে মালামাল বিক্রি করেছেন। স্থানীয়রা বলছে, তারা কাউকে কোন কিছু না জানিয়ে মেয়র ফারুক হোসেন ও কাউন্সিলর রাজ্জাক পৌরসভায় বসে নিলামের নামে ভাগ বাটোয়ারা করেছেন।
পার্বতীপুর বাজারের ব্যবসায়ী শ্যামল রায় বলেন, হরিণাকুণ্ডু পৌরসভার মেয়র স্হানীয় মহির কসাইয়ের নিকট বাজারের শেড দুটি বিক্রি করেন বলে শুনেছিলাম। দিন পনের আগে বাজার শেড ভেঙে আমার সামনে দিয়েই এর সব মালামাল নিয়ে যান মহির। এখানে কোন নিলাম হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই।
নিলাম না হওয়ার বিষয়টি বাজার শেডের ক্রেতা মহির উদ্দিনও স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, আমি শেড দুটি কিনতে আগ্রহ দেখালে মেয়র আমার নিকট থেকে আমার ভোটার আইডি কার্ড নেন। এরপর দুইদিন পর আমি শেডের মালামাল নিয়ে যেতে চাইলে কাউন্সিলর রাজ্জাক বলেন, মেয়র ঢাকায় থাকায় কাগজ রেডি হয়নি। এর তিনদিন পর মেয়র ঢাকা থেকে ফিরে আসলে আমাকে শেড ভেঙে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেন।
পৌর মেয়র ফারুক হোসেনকে ফোন করে নিলামের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, দুনিয়ার এত লোক থাকতে আমার বিষয়ে এত আগ্রহ কেন? আর কোনদিন কোন বিষয়ে আমার ফোনে কল দিবা না।
এ বিষয়ে জানতে হরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আক্তার
হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।