হরিণাকুণ্ডু(ঝিনাইদহ) থেকে রাব্বুল হুসাইন-
ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার কাপাশহাটিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহায়কের বিরুদ্ধে অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে।রেহায় পাচ্ছেন না বয় বৃদ্ধ বিধবা মহিলারাও। এছাড়াও তিনি অফিসে কাগজ পত্রের কাজ করে দেওয়ার নাম করে সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা। নামে অফিস সহায়ক হলে কি হবে টাকার বিনিময়ে তিনি করে দেন পর্চা,নাম জারী,খাজনা আদায়সহ নানা কাজ।কথিত আছে ঐ ভূমি অফিসে ঘুষের টাকা ছাড়া কোনও কাজ হয় না। খোঁজ নিয়ে জানা যায়,উপজেলার কাপাশহাটিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মচারী অফিস সহায়ক মোঃ আব্দুস সাত্তার সুযোগ পেলেই,সরকারি ফিসের অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে জমির (মিউটেশন) নাম জারি করে দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে এই ধরনের কর্মকাণ্ড করে থাকে বলে অভিযোগ উঠেছে।প্রশ্ন হলো,তিনি তো অফিস সহায়ক তাহলে এই ধরনের কাজের নাম ভাঙ্গিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে,কাজটি কে করে দেয় ? আনুমানিক আট নয় মাস পূর্বে আমি আমার জমির কাগজ পত্র ঠিক করতে কাচারীতে যায়। ঐ অফিসের সাত্তার নামে এক জন আমাকে বলে ভাবি কি কাজ করবেন? আমি লিখা পড়া জানি না,তাই আমার বিষয়টা তাকে বলিলে তিনি আমাকে বলে ভাবি টাকা ছাড়া কাজ হয়না। আপনার এই জমির কাজ করতে হলে ৯ হাজার টাকা লাগবে। আমি তখন বলিলাম ভাই আমার কাছে এতো টাকা নেই। এক পর্যায়ে আমি ৬ হাজার টাকা দিয়ে কাজটি করতে বাধ্য হই। আমার স্বামী নেই। অভাব সংসারের খরচ মিটিয়ে আমি তাকে ৬ হাজার টাকা দিলেও তিনি আমার জমির কাগজ পত্র ঠিকও করে দেয় না। পরবর্তীতে টাকাটাও ফেরত দেয়নি।আমার দুইটি কন্যা সন্তান তারমধ্য একটি কন্যা প্রতিবন্ধি। এই প্রতিবন্ধি মেয়েকে নিয়ে আমার সংসার,এমনটাই জানালেন শাখারীদাহ বাজার পাড়া গ্রামের মৃত তক্কেল বিশ্বাসের স্ত্রী আয়না খাতুন। সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহের সময়ে হঠাৎ চুল দাঁড়ি পাকাওয়ালা এক লোক এসে হাজির। তিনি জানান জমির নাম পত্তনের জন্য আমি কয়েকদিন ঘুরার পর ঐ অফিসের সাত্তার আমাকে বললো নাম পত্তন আমি করে দিবানে। সাত্তার আমার কাছ থেকেও তিন হাজার পাঁচ শত টাকা নিয়েছেন। তিনি এখন টাকাও ফেরত দেয় না,আবার কাজও করে দেয় না। অনেক ঘুরাঘুরির পরে এক হাজার টাকা ফেরত দেয়। আমি এখনো ২৫ শত টাকা পাবো বলে জানান একই গ্রামের মৃত ইলাহী বক্স বিশ্বাসের ছেলে তোফাজ্জেল বিশ্বাস। জমির (মিউটেশন) নাম জারি অনলাইন পদ্ধতিতে হয়ে থাকে আপনি কি তা জানেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান,আমরা মূর্খ মানুষ এসব কথা আমাদের কেউ বলেনি। এই প্রতিবেদন লেখার পরের দিন ২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার ভূমি অফিসের সাত্তার ঐ ভূক্তভোগী আয়না খাতুনের বাড়িতে গিয়ে ৫ হাজার টাকা ফেরৎ দিয়ে আসে বলেও জানাগেছে। এ বিষয়ে কাপাশহাটিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক সাত্তার অভিযোগ স্বীকার করে বলেন,তিনি কারো কাছ থেকে কোনও টাকা পঁয়সা নেননি। আবার নিজ মুখে বলেন,কই ঐ মহিলার টাকা তো বৃহস্পতিবার দিয়ে,দিয়েছেন। এ ঘটনায় উপজেলার কাপাশহাটিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলামের কাছে মুঠোফোন যোগাযোগ করলে তিনি বলেন,এই সব কাজ যখন করেছিলো তখন আমি দৌলতপুর ভূমি অফিসে ছিলাম। কারো কাছ থেকে কোনও টাকা পঁয়সা নিয়েছেন কিনা আমার জানা ছিলোনা। হরিণাকুণ্ডু উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার (ভুমি) সুস্মিতা সাহা জানান,জনসাধারণ যাতে ডিজিটাল সুবিধা ভোগ করতে পারে সেজন্য খুব শিগ্রহী জমির(মিউটেশন) নাম জারি অনলাইনে করা হয় মর্মে মাইকিং করা হবে। তাছাড়াও ঐ ঘটনার সত্যতা যাচাই পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।