গ্রাহকের ব্যাংকে জমাকৃত চেক দিয়ে জালিয়াতি চক্রের মামলা!

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-
ঝিনাইদহে লোন নেওয়ার সময় ব্যাংকে জমা দেওয়া চেক চুরি করে মামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী এক দম্পতি। শুক্রবার সকালে ঝিনাইদহের একটি মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন করে মহেশপুর উপজেলার ভুক্তভোগী ইয়াসমিন আক্তার ও তার স্বামী শফিকুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী ইয়াসমিন আক্তার অভিযোগ করে বলেন, আমার মহেশপুর পশু হাসপাতাল রোডে সালিম ট্রেডার্স নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিলো। ব্যবসা সম্প্রসারণ করার জন্য বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পি এল সি ঝিনাইদহ শাখা থেকে ২০১৫ সালে জমির দলিলসহ, ব্যাংক থেকে লোন নেওয়া সংক্রান্ত বিভিন্ন চাহিদাপত্র ও ৩৭ টি স্বাক্ষর করা ফাঁকা চেক (যার সিরিয়াল নাম্বার ০৭৫১৩৯৯ হতে ০৭৫১৪৩৫) জমা দিয়ে ১৮ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করি। ঋণ গ্রহনের পর হতে তিন বছরের মধ্যে ৩৬টা কিস্তির মাধ্যমে ৬১ হাজার ৫’শ ৬০টাকা করে প্রদান করার জন্য বলা হয়। সে মোতাবেক আমি ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পি এল সি ঝিনাইদহ শাখায় ০৭৫১৩৮৬ হতে ০৭৫১৩৯৮ মোট ১৩টি চেকের পাতা ব্যবহার করি। আমার জমা দেওয়া সকল চেক নিয়ম অনুযায়ী ব্যাংকের ভল্টে জমা থাকার কথা।

ইয়াসমিন আক্তার অভিযোগ করে আরও বলেন, ব্যাংকের কাছে রক্ষিত থাকা অবস্থায় ০৭৫১৪৩৪ নং চেক দিয়ে জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলা শহরের আদর্শ পাড়ার আবু জাফরের ছেলে আলমগীর হোসেন নামের এক ব্যক্তি আমার কাছে ৯৭ লক্ষ টাকা পাবে দাবী করে ঝিনাইদহ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছে। যার সি আর নাম্বার ২৩৯/২৫ । কিন্তু এই চেকের পাতাটি ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পিএল সি ঝিনাইদহ শাখায় জমা রেখেছি, তাহলে এই চেকের পাতাটি কোথায় পেলেন তিনি ?

তিনি আরো বলেন, ব্যাংকের কিছু অসাধু কর্মকর্তা জালিয়াতি চক্রের সাথে যোগসাজস করে গ্রাহককে ফাঁদে ফেলে টাকা লুট করে নিচ্ছে বলে আমি জানতে পারছি। এ চক্রের সাথে ব্যাংক কর্মকর্তারা জড়িত বলেও আমার সন্দেহ হয়। আমি এর প্রতিকার চেয়ে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়, দুদক ও বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দিয়েছি। ব্যাংক কর্তৃপক্ষসহ জালিয়াতি চক্রের সদস্যদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি করছি।

ব্যাংকে জমাকৃত চেক দিয়ে বহিরাগতদের মামলা করার বিষয়টি নিয়ে সচেতন মহল প্রশ্ন ছুড়েছেন। তারা বলেন, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ঝিনাইদহ শাখা তাহলে গ্রাহকদের সিকিউরিট বিষয় নিয়ে কিভাবে তত্ত্বাবধান করছেন? নিশ্চয় এই প্রতারণার কাজে ব্যাংকে কর্মরত কোন অসাধু চক্র জড়িত আছেন। বিষয়টি গভীর ভাবে তদন্ত করে চক্রটির আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান তারা।

এদিকে একটি সুত্র জানিয়েছে, গ্রাহকের চেক জালিয়াতি করার কারণে আলমগীর হোসেন নামে একজন একটি মামলায় তিন মাস কারাভোগ করে এসেছে।

এ ব্যাপারে ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পি এল সি ঝিনাইদহ শাখার ম্যানেজার মোঃ রকিবুজ্জামান এর মুঠো ফোনে কয়েকবার ফোন দিলে তিনি রিসিভ না করার
কারণে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ঝিনাইদহ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমার কাছে ব্যাংক ম্যানেজার একটি লোন সংক্রান্ত ব্যাপারে জিডি করার জন্য এসেছিলো। সেখানে তাদের কথা বার্তা শুনেছিলাম। যেহেতু আদালতে মামলা হয়েছে সে
কারণে আমি কোন পরামর্শ দেয়নি।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top