ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-
ঝিনাইদহের রাবেয়া হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের একটি কেবিন থেকে অনিল বিন (২৬) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি ঐ হাসপাতালের ডাঃ তারিক আক্তার খানের পার্সোনাল ড্রাইভার বলে জানা গেছে।
শুক্রবার (২৩ মে) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে হাসপাতালের আয়া রিনি খাতুন কেবিন পরিস্কার করতে যেয়ে তার লাশ জানালার গ্রিলের সাথে ঝুলতে দেখে চিৎকার দেয়। এসময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে এসে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে তার উদ্ধার করে।
নিহত অনিম বিন ময়মনসিংহ জেলা সদরের চর কালীবাড়ি, চর ঈশ্বদিয়া (চায়না মোড় মিলগেট বাজার) এলাকার হিরালাল বিনের ছেলে বলে সুত্রে জানা গেছে।
তবে এই মৃত্যুর কারণ নিয়ে জনশ্রুতিতে চলছে রহস্যের গন্ধ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কেউ কেউ বলছেন, রাতে ঐ ড্রাইভার তার প্রেমিকের সাথে মোবাইলে কথা বলেছে। হয়তো মনোমালিন্য না হওয়ায় রাগে-অভিমানে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে পারে। পুলিশ তার মোবাইল চেক করে ৪২ বার মিসকল উঠে আছে দেখতে পেয়েছে।
এদিকে ডাঃ তারিক আক্তার খান জানান, অন লাইনের মাধ্যমে তিনি ঐ ড্রাইভারের খোঁজ পান এবং গত রমজানের আগে পার্সোনাল ড্রাইভার হিসেবে তাকে নিয়োগ দেন। ঝিনাইদহতে তাকে কতবার নিয়ে এসেছেন প্রশ্নে তারিক আক্তার খান জানান, এই নিয়ে দুই বার আনা হয়েছে। আত্মহত্যার কারণ হিসেবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এবিষয়ে আমি কোন ধারণা করতে পারছিনা তবে পুলিশ জানিয়েছে ১৪ বার তার মোবাইলে মিসকল উঠে থাকতে দেখেছে।
মৃত ড্রাইভারের মোবাইলে কতবার মিসকল উঠে আছে এ নিয়েও রয়েছে ধোঁয়াশা। কেউ বলছেন ৪১ বার কেউ বলছেন ৪৩ বার, ডাঃ তারিক আক্তার খান জানান ১৪ বার!
এদিকে ঐ মিসকল উঠে থাকা নাম্বারটি প্রকৃত পক্ষে কার? এছাড়াও আর কারো সাথে কথা হয়েছে কি না ? তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনা হবে কিনা? কেউ তাকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দিয়েছে কি না? এমনকি তাকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালানোর অপচেষ্টা করছে কি না? এর সঠিক তদন্ত করে ঘটনার রহস্য জানতে চায় সচেতন মহল।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, আত্মহত্যার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে পোস্টমর্টেম করতে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, প্রাথমিক ভাবে তার মোবাইলে কয়েক বার মিসকল উঠে থাকায় আলামত পাওয়া গেছে। তবে কতবার মিসকল উঠে ছিল নির্ধারিত ভাবে তিনি বলতে পারেন নি।
এ বিষয়ে রাবেয়া হাসপাতালের পরিচালক সোহেল রানা জানান, তিনি ডাঃ তারিক আক্তার খাঁনের বক্তিগত গাড়ি চালাতেন। গতকাল সন্ধ্যায় ডাঃ সাহেবের নিয়ে ঢাকা থেকে আসেন। রাতে হাসপাতালের একটি কেবিনে ঘুমানোর জন্য ছিলেন। সকালে তাঁর ঝুলন্ত মরদেহ দেখে আমাকে খবর দিলে বিষয়টি আমি জানতে পারি।
মৃত ঐ ড্রাইভারের পরিবারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একই এলাকার নিঝুম আহমেদ নামে একটি মেয়ের সাথে দীর্ঘদিন অনিম বিনের সম্পর্ক চলে আসছিল। গত ৬ মাস আগে পরিবারের লোকজন জানতে পারে। মেয়েটি মুসলিম ধর্মের হওয়ায় এ সম্পর্কে মত দেয়নি অনিমের পরিবার। বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও ঐ মেয়েটি অনিমের পিছু ছাড়েনি। পরিবারটি আরো জানান, মৃত্যুর খবর শুনে ঐ মেয়ের পরিবার পলাতক রয়েছে বলে জানা গেছে।