ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-
ঐতিহাসিক ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উদযাপন উপলক্ষ্যে জুলাই শহিদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের সম্মিলন অনুষ্ঠান (৫ জুলাই,মঙ্গলবার) সকালে ঝিনাইদহ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সম্মিলন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আওয়াল। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাইফুর রহমান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, পুলিশ সুপার মনজুর মোরশেদ এবং সিভিল সার্জন ডাঃ কামরুজ্জামান। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, জুলাই শহিদ রাকিবুল হোসেনের গর্বিত পিতা আবু বকর সিদ্দিক, শহিদ শুভশীলের মা সাধনা রাণী শীল,শহিদ সাব্বির হোসেনের ভাই তরিকুল ইসলাম, ছাত্র প্রতিনিধি সাইদুর রহমান, শিবির নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন, নাঈম আহম্মেদ,ছাত্র অধিকার নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন, রিহান হোসেন এবং শারমিন সুলতানা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, আমরা যদি প্রত্যেক নাগরিকের বক্তব্য শুনতে পারি,তাদেরকে বাধাঁহীনভাবে সমানসুযোগ দিতে পারি,কোন রকম বৈষম্য না রেখে নাগরিক সুবিধা দিতে পারি তা হলে আর কখনো স্বৈরাচার ফিরে আসবে না। স্বৈরাচারের অনুসঙ্গ তৈরী হবে না। বিগত জুলাইয়ের ৩৬ দিনে যদি মানুষের চিন্তার খোরাক না দেয় সেটা আমাদের জন্য দূর্ভাগ্যের। এই অভ্যুত্থানে যারা শহিদ হয়েছে, যারা অন্ধত্ব বরণ করেছে,যারা পঙ্গুত্ব বরণ করেছে তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। যারা বেঁচে আছে তাদেরকে পূণর্বাসন করতে হবে। আমরা যেন শহিদদের ভুলে না যাই,তাদের পরিবারকে ভুলে না যাই এটাই হবে তাদের প্রতি সম্মান এবং শ্রদ্ধা।
তিনি বলেন,জুলাই যোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের আত্মত্যাগ নতুন দিনের সূচনা এনে দিয়েছে। দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় তাঁদের ভূমিকা অবিস্মরণীয়। সরকার সবসময় শহীদ পরিবার ও নাগরিকদের পাশে আছে। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ২৪ ঘণ্টা জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে হবে এবং জনগণের কথা শোনার জন্য অফিসগুলোকে আরও উন্মুক্ত রাখতে হবে। অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার মনজুর মোর্শেদ বলেন, গণঅভ্যুত্থানে পুলিশের প্রতি মানুষের যে ক্ষোভ যে ক্ষত সেই ক্ষত নিয়েই আমাদেরকে সামনে এগুতে হচ্ছে।
১৮৬১ সালে পুলিশ বাহিনি গঠিত হওয়ার পর কোন দিন পুলিশের কার্যক্রম বন্ধ হয়নি কিন্তু ২৪ এর গণঅভ্যুাত্থানে এই বাহিনি একবারেই ভেঙে পড়ে। আমার জুলাই যোদ্ধাদের কষ্টের কথা শুনেছি,তাদের বক্তব্য আমাদের শুনতে হবে। তিনি বলেন একটি বৈষম্যহীন দেশ গড়তে সকলকে এক যোগে এগিয়ে আসতে হবে।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক রথীন্দ্রনাথ রায়, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খালিদ হোসেন সিদ্দিকী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বকুল চন্দ্র কবিরাজ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জহিরুল ইসলাম সহকারী কমিশনার মেহেদী হাসান, সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন, জেলা তথ্য অফিসার আব্দুর রউফ, জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক সামিউল ইসলাম, জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক মোজাম্মেল করিম, সরকারী কেসি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু বকর সিদ্দিক, ঝিনাইদহ জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি এম এ কবীর, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা আয়ূব হোসেন রানাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি ও নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান শুরুর আগে শহীদ পরিবারের সদস্য এবং জুলাই যোদ্ধাদের হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করে নেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। অনুষ্ঠান শেষে ঝিনাইদহের তিন জন শহিদের পিতা-মাতা, স্বজন এবং জুলাই যোদ্ধাদের হাতে ক্রেস্ট, সম্মাননা এবং উপহার সামগ্রী তুলে দেন অতিথি বৃন্দ। এর আগে সকালে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আওয়াল এবং প্রশাসনের কর্মকর্তারা জুলাই শহিদদের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন।