ঝিনাইদহে সরকারি প্রকল্পের ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ নিয়ে সফল হচ্ছে যুব সমাজ 

সবুজ মিয়া, ঝিনাইদহ-
দেশের শিক্ষিত যুব ও যুব নারীদের ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ দিচ্ছে সরকার। সরকারের এ প্রকল্পের কাজটি ই-লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান পেয়ে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এ প্রকল্পে দেশের ৪৮ জেলার শিক্ষিত কর্মপ্রত্যাশী যুবদের ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি শীর্ষক প্রশিক্ষণ দিতে সরকারের ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা।

দেশের ৪৮ জেলার মধ্যে ঝিনাইদহেও দেখা গেছে এ প্রকল্পের একটি ব্রাঞ্চ। ঝিনাইদহ শহরের মডার্ন মোড় এলাকায় অবস্থিত ই-লার্নিং এন্ড আর্নিং লিমিটেড ঝিনাইদহ ব্রাঞ্চের সহকারী কো-অর্ডিনেটর মোঃ নাইমুর রহমান দুর্জয় গ্রামের খবরকে জানায়, প্রকল্পটির ঝিনাইদহে কার্যক্রম শুরু হয়েছে চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি থেকে এবং এর মেয়াদকাল ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এতে প্রতি ব্যাচে ৫০ জন করে প্রশিক্ষণার্থী ভর্তি করে ৩ মাসের এই কোর্সটিতে এপর্যন্ত আমরা ৩টি ব্যাচ সফল ভাবে সম্পন্ন করেছি। শিক্ষার্থীরা এখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশ ও বিদেশের সাথে কাজ করে তারা সফলতা অর্জন করছে। চতুর্থ ব্যাচে ভর্তি করা হয়েছে ৭৫ জন শিক্ষার্থী। আমাদের পূর্বের ব্যাচের সফলতা দেখে বর্তমান ব্যাচের শিক্ষার্থীরাও অতি আগ্রহের সাথে কাজ করে চলেছে। এদের প্রশিক্ষণ চলমান রয়েছে। আশা করছি এই ব্যাচটির প্রত্যেকটি সদস্য এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে সফলতার সাথে কাজ করতে পারবে। তিনি এ প্রকল্পের আওতাধীন ঝিনাইদহের প্রত্যেক যুব ও যুব বেকার নারীদের ই-লার্নিং এন্ড আর্নিং লিমিটেডের প্রশিক্ষণ নিতে আহ্বান জানান।

ঝিনাইদহ ব্রাঞ্চের দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী মোঃ ইলিয়াস হোসেন জানান, তিনি ই-লার্নিং এন্ড আর্নিং লিমিটেড ঝিনাইদহ ব্রাঞ্চ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে কাজ করছেন। তিনি বর্তমানে প্রতিমাসে প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ইনকাম করছেন। ব্যাকার যুবক যুবতীদের উদ্যেশ্যে তিনি বলেন, চাকরির জন্য চেষ্টার পাশাপাশি তারা যেন এই প্রশিক্ষণটি নিয়ে কাজ করতে থাকে। তাতে চাকরি না হলেও পরিবারের আর্থিক চাহিদা মেটাতে হতাশায় ভুগতে হবে না।

মোঃ রিজু আহমেদ পাপন নামে তৃতীয় ব্যাচের আরেকজন শিক্ষার্থী জানান, আমিও ঝিনাইদহ ব্রাঞ্চ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে কাজ করছি। বর্তমান তিনি প্রতি মাসে প্রায় ৩০ হাজার টাকা করে ইনকাম করছেন। পাপন সরকারের এমন উদ্যোগ কে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, বর্তমান চাকরির বাজারে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টিকে থাকা ভাগ্যের ব্যাপার। তিনি দেশে শিক্ষিত ব্যাকারের হার উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, অতএব চাকরির আসায় সময় নষ্ট না করে আমি এই প্রশিক্ষণ নিতে উদ্যোগী হয়েছিলাম। প্রশিক্ষণ শেষে আমি সফল ভাবে কাজ করছি। পরিবারের আর্থিক সহযোগিতা করতে এখন আর আমি চাকরির দিকে চেয়ে থাকার প্রয়োজন মনে করছিনা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ পাবেন দেশের ২৮ হাজার ৮০০ যুবক ও যুব নারী। শিক্ষিত বেকারদের ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা এবং বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ করাই হচ্ছে প্রকল্পের উদ্দেশ্য। প্রশিক্ষণ নিতে কোনো টাকা লাগবে না, বরং ৫০০ টাকা করে দৈনিক ভাতা পাবেন তাঁরা। সরকারের উদ্দেশ্য, প্রশিক্ষণ নিয়ে তরুণেরা দেশে বসেই বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাজ করবেন।

খোঁজ নিয়ে আরোও জানা গেছে, প্রকল্পটি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর এটি বাস্তবায়ন করে। প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে কাজটি পায়, ই–লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং লিমিটেড নামের একটি কোম্পানি।

তবে ইচ্ছুকদের আবেদন করতে হবে অনলাইনের মাধ্যমে। প্রশিক্ষণ নিতে আগ্রহীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা উচ্চমাধ্যমিক পাস এবং তাঁদের বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। প্রশিক্ষণের সুযোগ চূড়ান্ত করতে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। তিন মাসের প্রশিক্ষণকালে দৈনিক ভাতা দেওয়া হচ্ছে ২’শ টাকা। এছাড়াও প্রতিদিন বাকি ৩’শ টাকার মধ্যে থাকছে সকাল, দুপুর ও বিকেলে খাবারের ব্যবস্থা।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top