ঝিনাইদহে ২য় ধাপে ২৫৭ পরিবার পাচ্ছে প্রধান মন্ত্রীর স্বপ্নের নীড়

সবুজ মিয়া, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

আশ্রয়ণের অধিকার শেখ হাসিনার উপহার- এ শ্লোগানকে সামনে রেখে ঝিনাইদহে নির্মিত হচ্ছে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য ‘স্বপ্নের নীড়’। আজ ২১ জুলাই তৃতীয় পর্যায়ে (দ্বিতীয় ধাপে) জেলার ৬টি উপজেলার ২৫৭ টি উপকার ভোগী পরিবারের কাছে ঘরের চাবী তুলে দেয়া হবে। এতে ৫ একর ১৪ শতক খাস জমি বন্দোবস্ত দেয়া হয়েছে যার বাজার মূল্য ২ কোটি টাকা। প্রতিটি সেমি পাকা ঘরের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লক্ষ ৫৯ হাজার ৫শত টাকা। বুধবার সকালে ঝিনাইদহ জেলা প্রসাশকের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) রাজিবুল ইসলাম। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও ঝিনাইদহ পৌর প্রশাসক ইয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং জেলায় কর্মরত বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিক বৃন্দ। প্রেস ব্রিফিংয়ে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সারা দেশে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে প্রধান মন্ত্রী ঘর হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। এ সময় তিনি জেলার হরিণাকুন্ডু উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষনা করবেন। বক্তব্যে বলা হয় জেলার ৬টি উপজেলা এই ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে যুক্ত থাকবে। সকাল ৯টায় শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সরকারী কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক এবং উপকার ভোগীরা উপস্থিত থাকবেন। বেদে সম্প্রদায়ের ৫৯টি পরিবারের জন্য আনন্দের দিন।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বেদে সম্প্রদায়ের ভূমিহীণ ও গৃহহীন ৫৯টি পরিবারের জন্য তৈরি করা হয়েছে পাকা ঘর। সম্পূর্ণ নিরিবিলি পরিবেশে বাওড়ের কোল ঘেষে বাংলাদেশে এই প্রথম এত বেশি বেদে পরিবারের এক স্থানে পাকা ঘরে বসবাস হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী একটি পরিবারও গৃহহীন থাকবেন না। এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অধীন গৃহহীন ও ভূমিহীন বেদে সম্প্রদায়ের জন্য তৈরি করা হয়েছে এই বাসস্থান। বেদে সম্প্রদায়ের সদস্যরা পাকা ঘরে নতুন জীবনের স্বপ্নে বিভোর। পাকা এই বেদে পল্লীতে শিশুদের বিনোদনের জন্য তৈরি করা হয়েছে পার্ক। আনা হয়েছে বেশ কিছু রাইড। এছাড়াও তৈরি করা হবে মসজিদ। তাদের শিশুদের জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের জগন্নাথপুর গ্রামের মাজদিয়া বাওড়ের ধারে নির্মল পরিবেশে এই বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। ৫৯টি পরিবারের প্রায় ৩০০ জন সদস্য এই পাকা পল্লীতে থাকবেন। বেদে সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যের কথা মথায় রেখেই পল্লীটি নির্মান করা হয়েছে জলাধারের পাশে। একটি পরিবারের জন্য দুইটি রুম, একটি রান্না ঘর ও একটি পাকা টয়লেট তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও স্থাপন করা হয়েছে গভীর নলকুপ। কাশীপুরের বেদে সদস্য কাঞ্চন বিবি জানান, তারা খুব আনন্দিত। কখনো তিনি ভাবতে পারেননি পাকা ঘরে ঘুমাবেন। মুলত তারা অন্যের জমিতে খুপড়ি ঘরে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বসবাস করেছেন। এখন থেকে পাকা ঘরে ঘুমাবেন। সন্তানদের লেখাপড়া করাবেন। বেদে সম্প্রদায়ের নেতা হাবিবুর রহমান জানান, কালীগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ৭শ বেদে পরিবার রয়েছে। এর মধ্যে গৃহহীন ও ভূমিহীন রয়েছে বেশ কয়েকটি পরিবার । কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া জেরিন জানান, বেদে সম্প্রদায়ের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে মানবেতন জীবনযাপন করে আসছে তাদের পরিবারের জীবনমান উন্নয়ন, বেদে পরিবারের শিশুদের লেখাপড়া ও বিনোদনসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা রাখা হয়েছে এই বেদে পল্লীতে।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top