ডিসি কার্যালয়ে ৫ সাংবাদিককে আটকে রেখে নির্যাতন! বিভাগীয় কমিশনারের দপ্তরে অভিযোগ

অনলাইন ডেস্ক-

ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয়ে পেশাগত কাজে যাওয়া পাঁচ সাংবাদিককে আটকে রেখে নির্যাতন ও সংবাদ প্রকাশ না করতে মুচলেকা দিতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার বিচার চেয়ে গতকাল বুধবার খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নির্যাতনের শিকার সাংবাদিকেরা। গত সোমবার এ ঘটনা ঘটলেও গতকাল বুধবার তা সামনে আসে এবং জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় সংবাদটি ফলাও করে প্রকাশ হলে জেলা সাংবাদিকদের মাঝে আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

নির্যাতনের শিকার সাংবাদিকেরা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেনের বিরুদ্ধে তাঁর এলাকার লোকজন জেলা প্রশাসকের দপ্তরে একটি অভিযোগ দেয়। সোমবার আরডিসি মো. আনিচুল ইসলামের দপ্তরে ওই অভিযোগের তদন্ত চলছিল। এ সময় চেয়ারম্যানের সমর্থক ও প্রতিপক্ষের লোকজন মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। ওই কার্যালয়ের নিচে একটি মানববন্ধন চলছিল। সাংবাদিকেরা সেখানে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন। তৃতীয় তলায় চিৎকার শুনে সেখানে যান সাংবাদিক আলী হাসান, বাহারুল ইসলাম, মেহেদী হাসান, সম্রাট হোসেন ও আশরাফুল ইসলাম। তাঁরা সেখানে গিয়ে মুঠোফোনে মারামারির ভিডিও ধারণ করেন।

এই সাংবাদিকেরা অভিযোগ করেন, তাঁদের ভিডিও ধারণ করতে দেখে ক্ষেপে যান সেখানে উপস্থিত সিনিয়র সহকারী কমিশনার পার্থ প্রতিম শীল। তিনি ছুটে এসে তাঁদের হাত থেকে মুঠোফোনগুলো ছিনিয়ে নেন। এরপর সেখানে আসেন জেলা প্রশাসকের দপ্তরের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সালমা সেলিম, রাজীবুল ইসলাম খান ও মো. শরিফুল হক। তাঁরা একে একে মুঠোফোনে থাকা ভিডিওগুলো মুছে ফেলেন। এরপর তাঁরা সাংবাদিকদের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সেলিম রেজার কক্ষে নিয়ে যান। তবে তিনি তখন কক্ষে ছিলেন না। সেখানে নানাভাবে তাঁদের হেনস্তা ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে এ ঘটনায় কোনো সংবাদ লিখবেন না মর্মে মুচলেকা নেওয়া হয়। তারপর তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

সাংবাদিক আলী হাসান বলেন, গত তিন দিন তাঁর মানসিক কষ্টে কেটেছে। কাউকে কিছু বলতে পারেননি। প্রশাসনের কর্মকর্তারা লিখে নিয়েছেন এই বিষয়ে কিছু করতে পারবেন না। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ঘটনার বিচার চাওয়ার। এ জন্য খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন তাঁরা।

আরেক সাংবাদিক বাহারুল ইসলাম বলেন, পার্থ প্রতিম শীল আমাদের সঙ্গে যে আচরণ করেছেন, তা ভোলার মতো নয়।

এ বিষয়ে সিনিয়র সহকারী কমিশনার পার্থ প্রতিম শীল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, এ জাতীয় কোনো ঘটনা তাঁর জানা নেই।

জেলা প্রশাসক মনিরা বেগম বলেন, আমি ঘটনার সময় ছুটিতে ছিলাম। বিষয়টি জানলাম। বিষয়টি দেখব।
সুত্র- প্রথম আলো

শেয়ার করতে ক্লিক করুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top