বদলে যাচ্ছে ঝিনাইদহ জেলা কারাগারের সেবার মান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঝিনাইদহ-

বদলে যেতে শুরু করেছে ঝিনাইদহ জেলা কারাগারের সেবার মান। ২০০৪ সালে জেলা সদরের মথুরাপুরে স্থাপিত হয় ঝিনাইদহ জেলা কারাগার। ২০১০ সালের ১০ জুলাই জেলা কারাগারের উদ্বোধন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এডভোকেট সাহারা খাতুন। বর্তমানে জেলা কারাগারে ৫৩১ জন বন্দি ও ৯৬ জন কারারক্ষী রয়েছেন।
সদ্য যোগদান কৃত জেলার মোঃ শরিফুল ইসলাম জানান, জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলামের নির্দেশনায় জেলা কারাগারের বন্ধিদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পেতে কাজ শুরু করেছেন তিনি। তিনি জানান, কারাগারের অভ্যন্তরে স্থাপন করা হয়েছে ডে-কেয়ায় সেন্টার, যার মাধ্যমে ৬ বছরের কম বয়সী শিশুরা বন্দী মায়েদের সাথে থেকে তাদের মানসিক বিকাশের জন্য পড়াশুনার পাশাপাশি খেলাধুলা ও বিনোদনের সুবিধা পাবে। এছাড়াও মান বৃদ্ধি করা হয়েছে খাবারের। প্রত্যেক ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে খাদ্য তালিকা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। করাবন্দিদের সৎ সাহস ও মনোবল বৃদ্ধির জন্য প্রতি সপ্তাহে একবার তাদের প্রত্যেকের সমস্যার কথা শুনে তা তাৎক্ষনিক সমাধানের জন্য স্থাপন করা হয়েছে মুক্তমঞ্চ। বন্দিদের বিনোদনের জন্য সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। বন্দিদের মধ্যে রাজ মিস্ত্রী ও কাঠ মিস্ত্রীর কাজ করলে, তাদের লভ্যাংশের অর্ধেক মুনাফা দেওয়া হয়ে থাকে ।
কারাবন্দি রনি বলেন, তিনি বেশ কয় মাস যাবৎ কারাবন্দি রয়েছেন। পূর্বের সেবার মানের চেয়ে বর্তমান জেলার যোগদানের পর সেবার মান অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। সকল ক্ষেত্রে তিনি সার্বক্ষনিক খোঁজ খবর নিচ্ছেন। আমরা আগের চেয়ে অনেক ভালো আছি। প্রত্যেক কারাগারে এমন মানের জেলার থাকলে কারাগারের অভ্যন্তরের চিত্র পাল্টে যাবে।
অপর এক কারাবন্দি রবিউল ইসলাম বলেন, কারাগারে এসে আমি সময় মত নামাজ আদায় করাসহ পেট ভরে মানসম্মত খাবার খাচ্ছি। কারাগারে আসার আগে আমি টেনশনে ছিলাম। কিন্তু ভিতরে এসে আমার ধারণা পাল্টে গেছে। তিনি বলেন, কারাগারের ভিতরে অনেক কিছু শেখার আছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কারারক্ষী বলেন, নতুন জেলার স্যার যোগদানের পর থেকেই কারাগারের সকল দৃশ্যই বদলে গেছে। সকল কর্মকান্ডই নিয়মনীতি মেনেই পরিচালিত হয়। আমরা এখন চাকুরিতে স্বাচ্ছন্দবোধ করছি।
সদ্য যোগদান কৃত জেলার মোঃ শরিফুল ইসলাম বলেন, ইতিপূবে তিনি রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ জেলা কারাগারের দায়িত্বে ছিলেন। সেখানে তিনি সেবার মানবৃদ্ধি ও শুদ্ধাচারের জন্য ২০২১-২২ সালে পুরস্কৃত হন। তিনি বলেন ঝিনাইদহ জেলা কারাগার থেকেও আমি আগামীতে পুরস্কৃত হবো বলে আশা বাদি।
এব্যাপারে জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, ঝিনাইদহ জেলায় যোগদানের পর আমি জেলা কারাগার ২ বার পরিদর্শন করেছি। বর্তমানে জেলা কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেল সুপার হিসাবে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শরিফুল হক দ্বায়িত্ব পালন করছেন। আমি স্পষ্টভাবে সুপার ও জেলারকে বলে দিয়েছি যে, জেল কোড অনুযায়ী কারাগারের সকল কর্মকান্ড পরিচালিত হবে। বন্দিদের সাথে মানবিক আচরণ, খাবারে মানোন্নয়নসহ সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। কারাগারে দেখতে আসা বন্দিদের স্বজনদের বসার ও খাবার পানির ব্যাবস্থা করতে হবে। তিনি আরো বলেন, ঝিনাইদহের সকল দপ্তরের সেবারমান বৃদ্ধির জন্য আমি নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছি।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top