সবুজ মিয়া, ঝিনাইদহ-
ঝিনাইদহের হরিনাকুন্ডুতে নান্নু মিয়া (৩০) নামে এক হতদরিদ্র কৃষকের ১২ কাঠা জমির ধরন্ত শিম গাছ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গত সোমবার (১৩ অক্টোবর) দিবাগত রাতের কোন এক সময় চাঁদপুর জোয়াদ্দার পাড়ার দারিয়াপুর মাঠে এ ঘটনা ঘটে। কৃষক নান্নু মিয়া উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদ মিয়ার একমাত্র ছেলে। এ ঘটনায় প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ভুক্তভোগী কৃষক।
স্থানীয় কৃষকরা জানায়, কৃষক নান্নু মিয়া ১২ কাঠা জমিতে শিমের আবাদ করেছেন। গত দুই তিন মাস ধরে জমি পরিচর্যা করার পর এখন শিমের ফলন শুরু হয়েছে। কিন্তু সোমবার রাতে দুর্বৃত্তরা পুরো জমির শিম গাছের গোড়া কেটে দিয়েছে। এতে আমরাও ভয়ে আছি, কবে জানি আমাদের জমির ফলন্ত গাছগুলো এভাবে কেটে দেয় দুর্বৃত্তরা।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক নান্নু মিয়া জানান, মঙ্গলবার সকালে জমিতে পরিচর্যা করতে আসার পর দেখতে পাই আমার জমির শিম গাছের ডগা ও পাতা নুইয়ে পড়েছে। পরে দেখা যায় শিম গাছগুলোর গোড়া কাটা। রাতের আঁধারে কে বা কাহারা তার সব শিম গাছগুলো কেটে ফেলেছে। তার জমির প্রতিটি গাছে ফলন ধরা শুরু হয়েছিল। বিভিন্ন জায়গায় ধার দেনা করে এই চাষ শুরু করেছিলেন বলে জানান তিনি। এতে এ পর্যন্ত তার প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
ভুক্তভোগী ঐ কৃষকের মা জানান, আমার স্বামী অনেক আগেই মারা গেছে। আমার একমাত্র ছেলের এই কৃষি কাজের উপর সংসার চলে এবং পরিবারের অন্যান্য খরচও চালানো হয়। এবছর শিমের চাষ করবে বলে আমার ছেলে অনলাইনের মাধ্যমে খোঁজ করে উন্নত জাতের এই বিজ খুলনা থেকে নিয়ে আসে। বিভিন্ন জায়গায় ধার-দেনা করে এপর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। নান্নু বলেছিল শিম বিক্রি করে দেনা পরিশোধ করবে, পরিবারের মুখে হাসি ফোটাবে। কিন্তু গত রাতে সব স্বপ্ন ভেঙ্গে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এখন দেনা কিভাবে পরিশোধ করবে এই চিন্তাই ছেলেটি শেষ হয়ে যাচ্ছে। সরকার থেকে যদি কিছু ক্ষতিপূরণ পেতাম তাহলে একটু স্বস্তি পেতাম।
হরিনাকুন্ডু উপজেলা কৃষি অফিসার জানান, শিম গাছগুলো কেটে ফেলার খবর পেয়েছি। আমার উপ-সহকারী অফিসার কে ঘটনাস্থল ভিজিট করে একটি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিতে হবে।
হরিনাকুন্ডু থানার ওসি জানান, এ ঘটনায় এখনও কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
