হরিনাকুন্ডু থানা পুলিশের বিরুদ্ধে আসামি গ্রেফতারে গাফিলতির অভিযোগ!

হরিনাকুন্ডু থানা পুলিশের বিরুদ্ধে আসামি গ্রেফতারে গাফিলতির অভিযোগ!
পারিবারিক মামলায় আইনী সহায়তা পেতে বিড়ম্বনায় ভুগছে ভুক্তভোগী

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-
পারিবারিক মামলায় গত দেড় মাসের অধিক সময় বিজ্ঞ আদালত ওয়ারেন্ট জারি করলেও হরিনাকুন্ডু থানা পুলিশ আসামিকে গ্রেফতার করছেন না বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার। এতে আইনী সহায়তা পেতে বিড়ম্বনায় ভুগছেন বলে দাবি করেছেন ঐ পরিবারটি। পরিবারটি আরো অভিযোগ করে বলেন, দিনে ও রাতে পুলিশের চোখের সামনেই আসামি ঘোরাফেরা করছে অথচ পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছেন না। কোন অজ্ঞাত কারণে আসামিকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না, তা বুঝে উঠতে পারছে না তারা।
জানা গেছে, ২০২০ সালের ৩১ মে ঝিনাইদহের হরিনাকুন্ডু উপজেলার তোলা ফলসি গ্রামের ইবারত আলীর ছেলে ইকবালের সাথে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়, ঝিনাইদহ শহরের কালিকাপুরের বাসিন্দা টুটুলের মেয়ে সাদিয়ার।

দীর্ঘ দুই বছর সংসার চলাকালীন সময়ে ইকবাল বিভিন্ন মেয়েদের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলা এবং পরোকিয়া প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি যেনে গেলে ইকবালের স্ত্রী তাকে ঐ সমস্ত মেয়েদের সাথে কথা বলতে নিষেধ করে। কিন্তু ইকবাল নিষেধ অমান্য করে তাদের সাথে পরোকিয়া সম্পর্ক অব্যাহত রাখে এবং সাদিয়াকে কোন কারণ ছাড়াই মারধর গালিগালাজ করতে থাকে।

একপর্যায় সাদিয়াকে মেরে রক্তাক্ত জখম করে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। এর কিছুদিন পর ২০২২ সালের জুনের ১২ তারিখে তালাক নোটিশ পাঠিয়ে দেয় ইকবাল। পরে দিশেহারা হয়ে এবং মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে বিষয়টি মিমাংসার জন্য ঝিনাইদহ লিগ্যাল এইডের স্মরণাপন্ন হয় সাদিয়ার পরিবার। কিন্তু লিগ্যাল এইডেও মিমাংসা না হওয়ায় বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করেন সাদিয়া। সেখানে দীর্ঘ আড়াই বছর মামলা চলার পরেও কোন ফলাফল পায়না তারা। সাদিয়ার বাবা টুটুল অভিযোগ করে বলেন, এই আড়াই বছরে উকিল সাহেবরা আমার কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা নিয়েছেন কিন্তু কোন বিচার আমরা পায়নি। তিনি বলেন, আমি গরিব মানুষ রাজমিস্ত্রীর জুগাল দিয়ে দিনে ৫’শ টাকা পায়, আর তাই দিয়ে পরিবারের জীবীকা নির্বাহ করি। কিন্তু উকিলদের টাকা দিতে হবে বলে আমি রাত্রি নাইট গার্ডের চাকরি করেছি আর দিনে রাজমিস্ত্রীর জুগাল দিয়েছি। এই আড়াই বছর আমি ঘুম কি জিনিস তা চোখে দেখিনি! তিনি বলেন, তবুও আমার কষ্ট হতো না যদি আমি বিচার পেতাম! তিনি বলেন, হয়তো আমার উকিলকে ইকবাল টাকা দিয়ে প্রভাবিত করে রেখেছিল। যে কারণে আমি বিচার পাইনি। পরে অন্য উকিল ধরে জারি মামলা দায়ের করি এবং আবারো লিগ্যাল এইডে অভিযোগ করা হয়। এদফায় লিগ্যাল এইডের মিমাংসা মেনে নিলেও পরবর্তীতে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে লিগ্যাল এইডের দেওয়া পরপর ৪টি ডেট অমান্য করে ইকবাল। পরে আসামি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয় বলে প্রতিবেদন দিলে বিজ্ঞ আদালত ইকবালের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারী গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন এবং হরিনাকুন্ডু থানা পুলিশকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। অথচ দীর্ঘ দেড় মাস অতিবাহিত হলেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়নি। ভুক্তভোগী জানান, আসামির সাথে প্রায় প্রায়ই আমাদের দেখা হয়, কিন্তু ঝিনাইদহ সদরের পুলিশকে জানালে তারা বলেন হরিনাকুন্ডুর আসামি আমরা ধরতে পারবো না। আবার হরিনাকুন্ডুর পুলিশ কে জানালে তারা বলেন, আমরা চেষ্টা করছি। অথচ এই আসামি গ্রেফতারের জন্য কোন চেষ্টায় করছেন না হরিনাকুন্ডু থানা পুলিশ। ভুক্তভোগী টুটুল জানান, পরোকিয়ায় জড়িয়ে দিনের পর দিন ইকবাল আমার মেয়েকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে অবশেষে তালাক নোটিশ পাঠিয়েছে। এছাড়াও মেয়ের সুখের জন্য আমি লক্ষ লক্ষ টাকার মালামাল দিয়েছি সেগুলোতো ফেরত দেয়ই নি আবার একেরপর এক হুমকি দিয়ে যাচ্ছে ইকবাল । তাহলে মামলা করেইকি আমরা ভুল করেছি! আসলে আমাদের মত গরীবের জন্য কোন বিচার নেই। ওদিকে আমার মেয়েকে তালাক নোটিশ পাঠিয়ে পরোকিয়া প্রেমিকাকে বিয়ে করে খুব ভালোই দিন কাটাচ্ছে ইকবাল। অথচ আমরা বিচার পেতে দিন রাত খেয়ে না খেয়ে কোর্টের বারান্দায় ঘুরতে ঘুরতে পথে বসেছি।

আসামি গ্রেফতারের বিষয়ে হরিনাকুন্ডু থানার ওসি জানান, আমরা দ্রুতই আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানোর চেষ্টা করছি।

বি:দ্র: এই নিউজে অভিযুক্ত ইকবালের সাথে যে মেয়েটির ছবি পরোকিয়া প্রেমিকা বলে ছবির উপর লেখা ছিলো তা সত্য নয়। অভিযোগকারী অভিযুক্তকে পরোকিয়ার বিষয় প্রমাণ করতে তথ্য দাতার কাছে ভুল তথ্য দেয়। পরে প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে ছবির মেয়েটিকে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় তা ডিলিট করা হয়। উল্লেখ্য যে ঐ ছবি দিয়ে কেউ ব্লাকমেইল করার অথবা অন্য কোন অসৎ উপায় অবলম্বন করার চেষ্টা করলে প্রতিবেদক তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারবেন। তথ্য দাতার ভুল তথ্যের ভিত্তিতে ছবিটি পাবলিস্ট করার জন্য “গ্রামের খবর” কর্তৃপক্ষ আন্তরিক ভাবে ক্ষমা প্রার্থী।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top