ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-
বিগত ১৮ দিনেও মেয়েকে খোঁজ না পেয়ে অবশেষে সংবাদ সম্মেলন করেছেন চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার রায়পুর গ্রামের আব্দুল আজিজ। জোবাইদা ৫বছরের একটি পুত্র সন্তান ফেলে কোথায় গেছে খুঁজে পাচ্ছেন না তার পরিবার। ভুক্তভোগী পরিবারটি মনে করছেন পার্শ্ববর্তী বখাটে ও মাদক চক্র আসাদুলই তার মেয়েকে খুন জখমের ভয় দেখিয়ে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে গেছেন।
এর আগেও আসাদুল তার মেয়েকে খুন জখমের ভয় দেখিয়ে নিয়ে গিয়েছিল বলে পরিবারের দাবি। সেসময় বিভিন্ন মাদকচক্রের বাড়িতে নিয়ে রাত যাপন করেছে ঐ আসাদুল। মান সম্মান এবং বাবা মায়ের মেরে ফেলবে এই ভয়ে সহজ-সরল জোবাইদা কাউকে বলেনি সেই বিভৎস দিন গুলোর কথা। এমনকি তাকে জিম্মি করে মাদক চালানের হাতিয়ারও বানিয়েছিল এই চক্রটি। চক্রটির মধ্যে আরো যাদের নামে অভিযোগ করা হয় তারা হলো, উপজেলার উথলী গ্রামের শাহীন ড্রাইভার ও মেদিনীপুর গ্রামের রাজ্জাকের ছেলে হাকিম। আসাদুল জোবাইদাকে নিয়ে প্রথমে শাহীন ড্রাইভারের নিকট পৌঁছে দেয়, এরপর শাহীন তার স্ত্রী পরিচয়ে হাকিমের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে জোবাইদাকে নিয়ে শাহীন রাত যাপন করেন এবং শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয। শুধু শারীরিক সম্পর্কের কাজেই ব্যবহার করা হয়নি! মেদিনীপুরের ঐ হাকিমের রয়েছে মাদকের ব্যবসা। মাদক চালানের কাজেও ব্যবহার করা হয়েছে জোবাইদাকে। গত ৪ মাস আগে তার কাছে গাঁজা দিয়ে জীবননগর থেকে বাসে উঠিয়ে দিয়ে তাদের গন্তব্যে পাঠিয়ে দেয়া হয়। তবে সে চালান আর ঘরে তুলতে পারেনি হাকিম। কারণ অভিজ্ঞতা না থাকলে যা হয় তাই হয়েছে জোবাইদার ক্ষেত্রেও। অপরাধ বুঝতে না বুঝতেই ধরা পড়তে হয়েছে মহেশপুর পুলিশের হাতে। বুধবার (৩০ জুলাই) ঝিনাইদহ প্রেস ইউনিটিতে করা এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এমনি অভিযোগ তোলেন জোবাইদার পিতা আব্দুল আজিজ। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, জুবাইদার মা, একমাত্র ভাই ও ছোট বোন।
জোবাইদার পিতা আরো জানান, মেয়েকে মহেশপুর থানা পুলিশ খবর দিলে তারা জানতে পারে জোবাইদা গাঁজা সহ ধরা পড়েছে। পরে এও জানতে পারে জোবাইদাকে ঐ মাদক চক্রের সদস্য আসাদুল, শাহীন ও হাকিম জেল খানায় দেখতে গিয়েছে এবং তাকে জেল হাজত থেকে বের করে নিবে এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসে চক্রটি। জোবাইদা জামিনে মুক্ত হলে পুনরায় আসাদুল তার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করতে থাকে। বিষয়টি জানাজানি হলে আসাদুলের হাত থেকে মানসম্মান বাঁচাতে ডিটে-বাড়ি বিক্রি করতে বাধ্য হয় জুবাইদার বাবা। পরে গ্রাম ছেড়ে জীবন নগর শহরে পরিবার নিয়ে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতে থাকেন তারা। কিন্তু এতেও মেয়েকে রেহাই করতে পারেনি জোবাইদার পরিবার। গত ১৮ দিন আগে দোকানে যাওয়ার কথা বলে জুবাইদা আর বাসায় ফেরেনি। পরিবারের ধারনা পূর্বের ঐ চক্রটিই তাকে তুলে নিয়ে গেছে। এদিকে ৫বছরের সন্তানটি মায়ের শোকে কেঁদে কেঁদে দিন কাটাচ্ছেন বাবার কোলে। অপরদিকে মেয়েকে খুঁজে পেতে দারে দারে ঘুরছেন বাবা মা। এবিষয়ে বিজ্ঞ আদালতে মামলা করেছেন বলে জানান জুবাইদার বাবা। তবে অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগ করার মাধ্যম খোলা থাকলেও পুলিশ এখনো তাদের গ্রেফতার করতে পারেনি বলে জানান জোবাইদার পরিবার। সংবাদ সম্মেলনে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। সেই সাথে মেয়েকে অক্ষত অবস্থায় ফিরে পেতে প্রশাসনের দ্রুত ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানানো হয়।
উল্লেখ্য- শুরুতে এঘটনা জানতে পেরে জোবাইদার স্বামী আর তাকে ঘোরে তুলছেন না। গত ৮/৯ মাস জোবাইদা স্বামীর বাড়িতে উঠতে না পেরে বাবার বাড়িতেই থাকতেন।