কালীগঞ্জে থানার ওসিকে অপসারণের দাবিতে থানা ঘেরাও, সড়ক অবরোধ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কাশিপুর বেঁদেপল্লীতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আবু তালেব নামের একজনকে হত্যার ঘটনায় মামলা থেকে মূল পরিকল্পনাকারীকে বাদ দেওয়া ও সাদা কাগজে বাদীর স্বাক্ষর করিয়ে নেয়ার প্রতিবাদে থানা ঘেরাও ও মহাসড়ক অবরোধ করেছেন নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী। তারা কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম হাওলাদারের অপসারণ ও মামলায় প্রকৃত অপরাধীকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান।
রোববার (৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহরের বেঁদেপল্লীর প্রায় ২ শতাধিক নারী-পুরুষ থানায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। সেখানে তারা প্রায় এক ঘণ্টা অবস্থান করেন। পরে তারা ওসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইলেও দেখা পাননি। এরপর তারা শহরের নিমতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান নিয়ে ঝিনাইদহ- যশোর মহাসড়ক অবরোধ করেন। এ সময় সড়কের দু’পাশে শত শত গাড়ি আটকা পড়ে। এতে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েন। পরে তিনদিনের মধ্যে ওসির অপসারণের আল্টিমেটাম দিয়ে মহাসড়ক থেকে তারা সরে যায়।
জানা যায়, গত ৩ এপ্রিল ভোরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আবু তালেব নামে এক যুবককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ওই দিনই নিহতের ভাই আব্দুল আলীমকে থানায় ডেকে মামলার বাদী করানো হয়। কিন্তু এজাহারে কি লেখা আছে তার কিছুই তিনি জানেন না বলে অভিযোগ করেন। মামলায় রুবেল হোসেন নামে একজনকে আসামি করা হয়েছে। যাকে ওইদিনই গ্রেফতার করা হয়।
নিহতের ভাই ও মামলার বাদী আব্দুল আলীম বলেন, ঘটনার দিন তারা থানায় যান। এক পর্যায়ে থানার ওসি তাদের সবাইকে বের করে দেয়। পরে বাড়ি থেকে ফিরে জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর দিয়ে একটি মামলা নথিভুক্ত করেন। কিন্তু এজাহারে কি লেখা সেটি তারা জানেন না। ওসি নিজের মনমতো এজাহারে একজনকে আসামি করেছেন। কিন্তু হত্যার মাস্টারমাইন্ড ছিল সেলিম নামে একজন। তিনি একজন চিহ্নিত মাদক কারবারি। তার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। এই হত্যার মাস্টারমাইন্ড সেলিমকে ওসি মামলা থেকে বাদ দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, কালীগঞ্জ থানার অনেক পুলিশ সদস্য বেঁদেপল্লীতে গিয়ে সেলিমের সঙ্গে বসে আড্ডা দেয় এবং মাদক কারবারিদের কাছ থেকে টাকা নেয়। আমরা দ্রুত এই ওসির অপসারণ চাই। এই ওসি অপসারণ না হলে ভাই হত্যার বিচার পাবেনা বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
নিহত আবু তালেবের স্ত্রী জানেদা বেগম বলেন, তার তিনটা সন্তান। কিন্তু ওসি বলেছে এই সন্তান নাকি আবু তালেবের পক্ষের না। ওসি কুরুচিপূর্ণ ভাষায় বলেছেন আমি নাকি এই সন্তান অন্য কোথা থেকে এনেছি। তিনি বলেন, ওসি কিভাবে জানলো এই সন্তান আবু তালেবের না। আমি এখন এই তিনটা সন্তান নিয়ে কোথায় যাবো। ওসি টাকার বিনিময়ে সেলিমের নাম বাদ দিয়েছে। এই ওসিকে কালীগঞ্জে দেখতে চাই না।
এ ব্যাপারে জানতে কালীগঞ্জ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম হাওলাদারের সরকারি মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এরপর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া মুঠোফোনে বলেন, তিনি কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষার জন্য নড়াইলে আছেন। পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি। তবে বিষয়টি জানতে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনজুর মোরশেদকে ফোন দিলে পাওয়া যায়নি তাকেও।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top