ঝিনাইদহ টিটিসি’র কর্মমুখি উদ্যোগে বেদে সম্প্রদায় স্বপ্ন দেখছেন উন্নত জীবনের

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি 

বংশ পরম্পরা সাপ আর বানর খেলা দেখিয়ে বেদে সম্প্রদায়ের মানুষ জীবিকা নির্বাহ করতেন। নানা কুসংস্কারের মধ্যে তাদের জীবন অতিবাহিত হতো। এখন এই পেশা আর চলে না আয় রোজগার নেই বললেই চলে। বর্তমান সরকার পিছিয়ে পড়া সকল জনগোষ্ঠীকেই সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন সেজন্য বেদে সম্প্রদায়ের সদস্যদের মুলধারায় ফিরিয়ে আনতে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহন করেছে ঝিনাইদহ টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (টিটিসি)। বর্তমান সরকার সমাজের অবহেলিত পিছিয়ে পড়া বেদে সম্প্রদায়কে কর্মমুখী করে গড়ে তুলতে নিয়েছেন নানা ধরনের পদক্ষেপ। সেই ধারাবাহিকতায় প্রবাসী কল্যান মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে সরকারী খরচে দেশের বাইরে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ঝিনাইদহ টিটিসিতে বেদে সম্প্রদায়ের নারী পুরুষের ১২ শিক্ষার্থী বিভিন্ন সেক্টরে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। প্রশিক্ষণ শেষে তাদের দেশের বাইরে পাঠানো হবে। এ ভাবে সমাজে অবহেলিত জনপদের মানুষদের নিয়ে ঝিনাইদহ টিটিসি ব্যাপক কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বলে জানালেন কলেজটির অধ্যক্ষ মোঃ রুস্তম আলী। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ এলাকায় টিটিসির যাত্রা শুরু হয় ২০০৬ সালে। সেই থেকে সরকারের বিভিন্ন উদ্যগে শুরু মানব সম্পদ উন্নয়নের কাজ। জেলায় বেকারত্বের হার কমিয়ে দক্ষ জনশক্তি উন্নয়নে কাজ করছে ঝিনাইদহ টিটিসি। বর্তমানে বিভিন্ন সেক্টরে বেকার ছেলে মেয়েদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ জনশক্তিতে পরিনত করে দেশে ও দেশের বাইরে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে। এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ছেলে মেয়েরা দেশ এবং দেশের বাইরে কাজ করে দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা পালন করছে বলে জানান অধ্যক্ষ রুস্তম আলী। সরজমিন গিয়ে দেখা যায় অধ্যক্ষ রুস্তম আলী আন্তরিক তত্ত্বাবধানে ও জেলা প্রশাসকের সদিচ্ছায় অবহেলিত জনপদ এবং পিছিয়ে পড়া বেদে সম্প্রদায়ের মানুষদের নিয়ে নতুন পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। বেদে সম্প্রদায়ের নারী পুরুষ উভয়কে প্রশিক্ষনের মাধ্যমে দক্ষ করে তুলতে টিটিসি কর্তৃপক্ষ ড্রাইভিং, ইলেক্ট্রিশিয়ান, প্লাম্বার ও সুইং আপরেটর হিসেবে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণরত সাইফুল ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থী জানান, আগে আমরা যাযাবর জীবন যাপন করতাম। এখন টিটিসিতে ভর্তি হওয়ায় আমরা নতুন,নতুন কর্ম দক্ষতা শিখছি এবং নিজেদেরকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলছি। টিটিসির অধ্যক্ষ জানান, এখান ভর্তি হওয়া ছাত্রদের ৬ মাসের মধ্যে বিনামূল্যে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করা হচ্ছে। অন্য দিকে টিটিসি তে জাপানী ভাষাও শেখানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে গত জানুয়ারী মাসে বেশ কয়েকজনকে জাপানে পাঠানো হয়েছে। তারা সকলেই এখন জাপানে কর্মরত।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top