আগুন লাগিয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর ভয়ে নৌকার অফিসে সিসিটিভি স্থাপন

নির্বাচনী অফিস পুড়িয়ে মামলায় প্রতিপক্ষকে ঘায়েলের আতঙ্কে গান্না বাজারে নৌকার অফিসে বাজার কমিটির সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঝিনাইদহ-২ নির্বাচনী এলাকার গান্না বাজারে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলার হাত থেকে বাঁচতে নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী অফিসে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার বিকালে স্থানীয় বেতাই-চন্ডিপুর ফাঁড়ির পুলিশের উপস্থিতিতে গান্না বাজার কমিটি গান্না বাজারে অবস্থিত নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী অফিসে ৩টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করেছে। জানাগেছে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না বাজারে গত ২৭ ডিসেম্বর রাতে স্বতন্ত্র প্রার্থী নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুলের সমর্থক আলা উদ্দিন নামের এক ব্যবসায়ীর ওপর নৌকার সমর্থকদের হামলা চালিয়ে জখম, দোকান ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করে ভুক্তভোগী আলা উদ্দিন। এই ঘটনার পরের দিন অফিসে আগুন লাগানো ও বোমা বিষ্ফোরণের অভিযোগ এনে ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় এজাহার জমা দেয় ব্যবসায়ী আলা উদ্দীনের ওপর হামলা মামলার প্রধান আসামি নাসির উদ্দিন মালিথার ছেলে ও এজাহার নামীয় আসামি সাগর হোসেন। কিন্তু সদর থানা পুলিশ এই ঘটনায় গান্না বাজার কমিটি, বাজারের নাইট গার্ড, স্থানীয় বাসিন্দা ও বেতাই-চন্ডিপুর পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশের মাধ্যমে তদন্ত করে ঘটনা মিথ্যা বলে প্রমাণ পাওয়ায় মামলা গ্রহণ করেনি। এই ঘটনার পরে সোমবার দিবাগত রাতে পূণরায় মুখোশধারী কয়েকজন ব্যক্তি নৌকার অফিসে আগুন লাগানোর চেষ্টা করে। বাজারের পাহারাদার ও স্থানীয়দের তৎপরতায় তারা আগুন লাগাতে ব্যর্থ হয়ে পালিয়ে যায়। এই ঘটনার পরে আতঙ্কিত হয়ে বাজার কমিটি নৌকার অফিসে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। গান্না বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহাজান আলী বলেন, গান্না বাজার কমিটির সদস্য ও মোবাইল ব্যবসায়ী আলা উদ্দীনের হামলার ঘটনার পরের দিন সকালে অফিসের পাশে কামাল ষ্টোরের মালিক কামারুলের কাছে যেয়ে পারভেজ নামের এক ছেলে নৌকার অফিস পোড়ানের খবর দেয়। পারভেজ গান্না বাজারের বাসিন্দা লিটন শাহ’র ছেলে ও সাবেক চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন মালিথার নিকট প্রতিবেশি। পারভেজ নৌকার অফিসে প্রতিদিন বিকালে চা বানানোর কাজ করে। এই খরব শুনে কামারুল বাজার কমিটির নেতাদের ফোন করে। ফোন পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যেয়ে দেখতে পায় অফিসের টেবিলের নিচে এক হাত মতো জায়গা পুড়ানো হয়েছে। পারভেজ এত সকালে অফিসে কি করতে এসেছে, কিভাবে দেখলো এমন প্রশ্ন করলে সে এলোমেলো কথা বলতে থাকে। সেই রাতেও বাজারের পাহারাদারেরা সকাল ৬টা পর্যন্ত পাহারা দিয়েছে। অথচ তাদের চোখে কিছু বাধেনি। রাতে পাহারাদারদের সাথে পুলিশও ছিলো। তিনি বলেন, এই ঘটনার পরে ঈগলের সমর্থকদের নামে মামলা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। যে কারণে আমরা বাধ্য হয়ে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করেছি। বেতাই-চন্ডিপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই আমির জানান, নিরাপত্তার জন্য গান্না বাজারের নৌকার নির্বাচনী অফিসে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। আগের ঘটনায় ইলেকট্রোরাল মনিটরিং কমিটির তদন্ত চলছে। মঙ্গলবার তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আমরা চাই শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হোক। কোন হানাহানি যেন না ঘটে আমরা সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি। এদিকে, গান্না বাজারে নৌকার নির্বাচনী অফিসে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করলেও শঙ্কায় রয়েছে চন্ডিপুর, কালুহাটির নির্বাচনী অফিস নিয়ে। জানাগেছে, কালুহাটি গ্রামে সরকারি স্থাপনায় নৌকার প্রতীকের নির্বাচনী অফিস বানানো হয়েছে। সবকিছু নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top