ঝিনাইদহে গুলিতে দুইজন নিহত, আহত-১

নিজস্ব প্রতিবেদক-

ঝিনাইদহের মহেশপুরে এক স্বর্ণ চোরাকারবারীর গুলিতে শমীম হোসেন (৩৩) ও মন্টু মিয়া (৩২) নামের দুই চোরাকারবারী নিহত হয়েছে। বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার ভারতীয় সীমান্তের নেপা ইউনিয়নের বাগাডাঙ্গা (পল্লিআইট) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শামীম বাগাডাঙ্গা পল্লিআইট গ্রামের সামছুর রহমানের ছেলে এবং মন্টু মিয়া একই গ্রামের নয়ন মন্ডলে ছেলে বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় শামীমের পিতা শামসুল হক গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তবে এ ঘটনায় এখনও কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। ঘটনার পর থেকেই হত্যাকারী তরিকুল ইসলাম ওরফে আকালে পলাতক রয়েছে।

জানা যায়, পূর্ব থেকেই সীমান্ত এলাকায় স্বর্ণ চোরাচালান নিয়ে মহেশপুরের বাঘাডাঙ্গা গ্রামের আকালে নামের এক ব্যক্তির সাথে বিরোধ ছিল শামীম হোসেন, রাফি এবং মন্টু মন্ডলের। এই বিরোধের জেরে বুধবার বিকেলে মন্টু ও শামিম একই গ্রামের আকালে’র বাড়িতে হামলা করে। এসময় আকালে দৌড়ে তার বাড়ির ছাদের উপর উঠে যায়। পরে সে ছাদ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করে। গুলিতে মন্টু ঘটনাস্থলেই নিহত হয়।

এসময় স্থানীয়রা আহত শামীম ও তার পিতা শামসুলকে উদ্ধার করে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক শামীমকে মৃত ঘোষণা করেন। গুলিবিদ্ধ শামসুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

মহেশপুর থানার ওসি মাহাবুবুর রহমান জানান, হতাহত ও হামলাকারী সকলেই স্বর্ণ চোরাকারবারের সাথে জড়িত। চোরাকারবারীর বিষয় নিয়ে দ্বন্দের জেরেই হত্যার ঘটনা ঘটেছে।

মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মাহমুদ বিন হেদায়েত বলেন, নিহত শামীমকে আমরা মৃত অবস্থাতেই পেয়েছি। তার বুকে গুলির চিহ্ন আছে। আর তার পিতা শামসুলকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে নেপা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শামসুল আলম জানান, এরা সকলেই চোরকারবারী। প্রায়ই আকালে, শামীম, মন্টু ভারতে যেতো। ব্যবসায় বিরোধের জেরেই এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটতে পারে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ওবাইদুর ইসলাম ও নারী ইউপি সদস্য ছায়েরা খাতুন জানান, কিছুদিন পূর্বে শামীমের মাদকের চালান ধরিয়ে দেওয়াকে কেন্দ্র করে পল্লিআইট গ্রামের শামীম ও তরিকুলের মধ্যে মারামারি হয়। পরে শামীমের মামলায় তরিকুলকে জেল খাটতে হয়। তিনি আরও জানান, গত দুই-দিন আগে তরিকুল জেল থেকে জামিনে ফিরলেও শামীম গ্রুপের চাপে সে বাড়ি থেকে বের হতে পারছিল না। বুধবার বিকেলে শামীম তার দলবল নিয়ে তরিকুলের বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় তরিকুল বাড়ির ছাদের উপর গিয়ে শামীম ও মন্টুকে লক্ষ্য করে গুলি করে। গুলিতে মন্টু ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। এসময় স্থানীয়রা আহত শামীমকে মহেশপুর উপজেলা হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায। সন্ধ্যায় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে মন্টুর মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। বর্তমানে আকালে পলাতক আছে।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top