মহেশপুরে শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উপকরণ বাণিজ্যের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঝিনাইদহ:

ঝিনাইদহের মহেশপুরে সহকারি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের স্লিপ, রুটিন, মেরামত ও প্রাক প্রাথমিক বরাদ্দের নগদ অর্থ না দিয়ে উপকরণ বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষকরা।
অভিযোগে জানা গেছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশুদের লেখাপড়ার মান উন্নয়ন ও বিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষে প্রতিবছর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে স্লিপ বরাদ্দ দেওয়া হয় ৪০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ৫০হাজার টাকা, রুটিন মেরামত বাবদ ৪০হাজার টাকা এবং প্রাক প্রাথমিক বরাদ্দ ১০ হাজার টাকা। নিয়ম অনুযায়ী এই বরাদ্দের টাকা দিয়ে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটিকে সাথে রেখে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন উপকরণ সামগ্রী ও মেইনটেনেন্স কাজ করাবেন। সরকারি বরাদ্দ আসলেই এসব টাকা স্ব-স্ব বিদ্যালয়ের ব্যাংক একাউন্টে প্রদান করে থাকেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে মহেশপুর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আসাদুজ্জামান নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে নিজেই এ সকল উপকরণ বাজার থেকে কম দামে ক্রয় করে প্রধান শিক্ষকদের কাছে তিনগুণ বেশিদামে বিক্রি করে আসছেন। তিনি দীর্ঘ ৬ বছর এ উপজেলায় কর্মরত থেকে এই উপকরণ বানিজ্য করে হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। এছাড়া নিয়ম বহির্ভূত প্রতি বছর অফিস খরচ বাবদ বিদ্যালয় প্রতি ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা করে নিয়ে আসছেন। কোনো বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক যদি অফিস খরচের টাকা দিতে দেরী করে, তাহলে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করারও অভিযোগ রয়েছে ওই শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে। তার অধিনস্ত বিদ্যালয়ের সংখ্যা উপজেলায় মোট ৫১টি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের জিম্মি করে এসব অবৈধ কাজ করে যাচ্ছেন দেদারসে। একেরপর এক এধরনের কর্মকান্ড করে গেলেও কোন এক অদৃশ্য ভয়ে তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায়না শিক্ষকরা। একই রকম অনিয়ম দুর্নীতির কারণে সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলায় কর্মরত থাকা অবস্থায় দুর্নীতি দমন কমিশনে এই অফিসারের বিরুদ্ধে একটি মামলাও চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে এ সকল অভিযোগ অস্বীকার করে প্রতিবেদকের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী চলতে হয়। একথা বলেই তিনি সংযোগ কেটে দেন। এরপর তার ব্যবহৃত মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনন্দ কিশোর সাহা জানান, এসব ঘটনায় বিদ্যালয় থেকে লিখিত কোনো অভিযোগ এ পর্যন্ত আসেনি। লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

 

শেয়ার করতে ক্লিক করুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top