ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-
ঝিনাইদহ পৌর এলাকায় স্ত্রী হত্যা মামলার প্রধান আসামি পাষন্ড স্বামী জহুরুল ইসলাম (২৮) কে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ মে) সদর পৌর এলাকার আরাপপুরে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে
র্যাব-৬ তাকে গ্রেফতার করে। জহুরুল ইসলাম কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাসিন্দা।
র্যাব-৬ এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে সাংবাদিকদের জানান, স্রী সিমা খাতুনের সাথে আসামী মোঃ জহুরুল ইসলামের গত ৫/৬ বছর পূর্বে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় সিমার বাবা যৌতুক বাবদ নগদ টাকা এবং সংসারের বিভিন্ন জিনিসপত্র প্রদান করেন। সংসার জীবনে তাদের একটি পুত্র ও একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। কিছুদিন যাবত জহুরুল ব্যবসা করার কথা বলে সিমার নিকট থেকে ২ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। বিষয়টি জানতে পেরে সিমার বাবা তার অভাব অনটনের সংসার হতে ১লক্ষ টাকা যৌতুক প্রদান করেন।
এদিকে জহুরুল যৌতুকের অবশিষ্ঠ টাকা দাবী করে পুনরায় স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। দাবী করা যৌতুকের অবশিষ্ট টাকা না পেয়ে গত ১৩ই মে স্ত্রী সিমার সাথে জহুরুলের বাকবিতন্ডা হয়। তখন স্ত্রী সিমা যৌতুকের অবশিষ্ঠ টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে সহযোগীদের সহায়তায় পাষন্ড স্বামী জহুরুল তার ভাড়াকৃত বসত ঘরের মধ্যে লোহার হাতুড়ী দিয়ে এলোপাথাড়িভাবে আঘাত করে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা টের পেয়ে ছুটে এসে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করলে একই তারিখ চিকিৎসারত অবস্থায় সীমার মৃত্যু হয়।
এদিকে মেয়েকে হত্যা করায় সিমার বাবা বাদী হয়ে সিমার স্বামীকে প্রধান আসামি করে ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলার পর র্যাব-৬, ঝিনাইদহ ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল হত্যাকারী পাষন্ড স্বামী জহুরুল ইসলামকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে অভিযান অব্যাহত রাখে। পরবর্তীতে র্যাব-৬ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে, আসামীর অবস্থান নিশ্চিত করে সদর পৌর এলাকার আরাপপুরে অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামি স্বামী জহুরুলকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
ঝিনাইদহ র্যাব-৬ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার ইশতিয়াক হোসাইন জানান, খুনি জহুরুলকে পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে ঝিনাইদহ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।