ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহ জেলায় নির্মানাধিন ৭টি মডেল মসজিদের মধ্যে ৫টি নির্মান কাজের অগ্রগতি নেই বললেই চলে। অথচ দরপত্র চুক্তি অনুযায়ী দু বছর আগেই নির্মান কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। যেভাবে মসজিদ গুলোর নির্মান কাজ চলছে তাতে শেষ হতে এখনো অনেক দেরি। নির্মানাধীন মসজিদের মধ্যে রয়েছে, ঝিনাইদহ জেলা মডেল মসজিদ, ঝিনাইদহ সদর উপজেলা মডেল মসজিদ, শৈলকুপা উপজেলা, কালীগঞ্জ উপজেলা ও হরিণাকুন্ডু উপজেলা মডেল মসজিদ। দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদ গুলো নির্মান করছে গনপুর্ত অধিদপ্তর। ৭টি মসজিদের মধ্যে মহেশপুর ও কোটচাঁদপুর উপজেলা মডেল মসজিদের নির্মান কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। এ মসজিদ দুটি ২৩ সালের ফেব্রুয়ারির মাঝা মাঝির দিকে প্রধান মন্ত্রী উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছেন ইসলামি ফাউন্ডেশন ঝিনাইদহের উপ পরিচালক আব্দুল হামিদ খান।
এদিকে জেলা গনপুর্ত অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ জেলা মডেল মসজিদ নির্মানে ব্যয় বরাদ্ধ আছে ১৪ কোটি ৮৯ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। মসজিদটির নির্মান কাজ মেসার্স লিটন ট্রেডার্স এন্ড জে,এস কনস্ট্রাকশনের (জেভি) মালিক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম করছেন। কিন্তু নির্মানের শুরু থেকেই মসজিদটির কাজের অগ্রগতি থাকে ধীর গতি। দরপত্র চুক্তি অনুযায়ী ২০২০ সালের ৮ জুন নির্মান কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও চলতি অর্থ বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত দেখা যায় নির্মান কাজের শতকরা মাত্র ২৫ ভাগ শেষ হয়েছে, যা প্রত্যাশী সংস্থার নজরে কখনই কাম্য নই। সুত্রমতে ভবনের ১ম তলার ছাদের সেন্টারিং, সাটারিং এবং রড বাধাই এর কাজ অত্যন্ত ধীর গতিতে দীর্ঘদিন যাবত চলছে। তাছাড়া চুক্তির মেয়াদ ২ বছর আগে শেষ হলেও সময় বৃদ্ধির জন্য অদ্যবধি কোন আবেদনও করেননি এই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। কাজের অগ্রগতি না থাকায় প্রত্যাশী সংস্থার কাছে প্রতিনিয়ত ভাবমুর্তি বিনষ্ট হওয়াসহ অপ্রীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। যে কারনে প্রতি মাসের জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় অসন্তোষটি প্রকাশ করেন এবং সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে কালো তালিকাভুক্ত করার লক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করতে বলেন জেলা প্রশাসক। এছাড়াও প্রকল্প পরিচালক সাইট পরিদর্শন কালে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং চুক্তি বাতিলের লক্ষে ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেন।
তথ্যে আরও জানা যায় যে, প্রকল্পটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটি জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প এবং অত্র মন্ত্রণালয়ের অগ্রাধিকার তালিকাভুক্ত একটি প্রকল্প হওয়ায় কাজটির গুনগতমান অক্ষুন্ন রেখে নির্ধারিত সময়ে শেষ হওয়া অত্যন্ত জরুরী। যে কারনে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে একাধিক পত্রের মাধ্যমে সতর্ক করা হলেও বাস্তবে কোন অগ্রগতি দেখাতে পারেনি। এতে তার আর্থিক দৈনতার বিষয়টি ক্রমশয় স্পষ্ট হয়েছে। যে কারনে তার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কাজটি কোন ভাবেই শেষ করা সম্ভব নয় বলে প্রতিয়মান হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির সাথে চুক্তি বাতিল করা হয়েছে।
এছাড়াও, দরপত্র দলিলের GCC Clause 89(b)(i) অনুযায়ী দরপত্রটি বাতিল করার বিধান থাকায় তা বাতিল করা হয়েছে, যা আগামি ২৩ সালের ৮ জানুয়ারি কার্যকর হবে বলে জানা গেছে। এছাড়াও চুক্তি বাতিল হলে দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী কার্যসম্পাদন জামানত বাজেয়াপ্ত করাসহ বিলম্ব জনিত কারণে Liquidated damage এবং অনিষ্পন্ন কাজের মুল্যের উপর শতকারা ১০ ভাগ জরিমানা আরোপ করা হবে বলেও জানা যায়।