ঝিনাইদহে সিও এনজিও’র বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগে কর্মীদের মানববন্ধন

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-

ঝিনাইদহের সিও এনজিও’র বিরুদ্ধে কর্মী নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে মানববন্ধন ও অনশন কর্মসুচি পালন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্যাতিত কর্মীরা সংস্থাটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এই কর্মসুচি পালিত করে। এসময় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নির্যাতিত কর্মীরা ক্রন্দনরত ভাবে বলেন, তাদের কাছে যে অযৌক্তিক দাবি করে, তা না মানলে সিও অফিসে আটকে নির্যাতন ও মিথ্যা চেকের মামলা দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে।

গাইবান্ধার সুই গ্রামের এবিএম মাহবুবুর রশিদ জানান, তিনি সিও এনজিওতে চাকরী করেছেন সততার সঙ্গে। তিনি কোন আর্থিক কেলেংকারীর সঙ্গে জড়িত নয়। সিও সংস্থার হিসাব নিকাশ বা খাতা কলমে তিনি দায়ী নয়। অথচ চাকরী গ্রহনের সময় তাদের কাছে জমা রাখা খোলা চেকে ২৯ লাখ টাকা বসিয়ে মিথ্যা মামলা করেছেন। এই মামলা চালাতে গিয়ে তিনি দেওলিয়া হয়ে গেছেন। তার সংসার ভেঙ্গে গেছে। মিথ্যা মামলায় একাধিকবার জেলও খেটেছেন তিনি। তিনি বলেন, প্রশাসনিক প্রতিকার না পেলে আমরা সবাই সেচ্ছায় আত্মহুতি কর্মসুচি দিতে বাধ্য হবো।

শৈলকুপার চন্ডিপুর গ্রামের সাবিনা ইয়াসমিন জানান, তিনি সিও এনজিওতে ১২ বছর হিসাব রক্ষক পদে চাকরী করেছেন। তিনি চাকরী ছেড়ে দিলে তার নামেও ১৯ লাখ টাকার চেকের মামলা করেছেন। তিনি বলেন, একই অংকের টাকা আত্মসাতের দায়ে তার স্বামী ফারুক ও সিও এনজিওর আরেক কর্মী তানিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

মেহেরপুরের আমদহ গ্রামের আমিরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, সিও এনজিও’র মালিক সামছুলের প্রধান ব্যবসা খোলা চেকের মামলা। তিনি বলেন, তার কাছে জমা রাখা কর্মীদের খোলা চেকে ইচ্ছামতো টাকার অংক বসিয়ে গত বছর আড়াই’শ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সিও এনজি’ওর এই রমরমা ব্যবসায় শত শত কর্মী ও ঋন গ্রহীতা পথে বসেছেন। অনেকে দেউলিয়া হয়েছেন, ভেঙ্গে গেছে সংসার।

খুলনার মাসুদা পারভিন জানান, তিনি চাকরী ছাড়ার পরও তার মুল সার্টিফিকেট আটকে রেখেছে সিও। আবার খোলা চেকের মামলা দিয়েছে তিনটি। শুধু তিনিই নয়, যশোরের রবিউল, কুষ্টিয়ার শওকত আলী, একই জেলার গৌরাঙ্গ কুমার, কালীগঞ্জের আশিক, পাবনার সুবর্ণা খাতুন, সোহেল রানা, সাইফুল ইসলাম, শৈলকুপার মাহমুদ ও মহেশপুরের রুপা খাতুনসহ একশ’র অধিক ব্যক্তির নামে সিও এনজিও মিথ্যা চেকের মামলা করে হয়রানী করছেন।

এ বিষয়ে সিও এনজিওর নির্বাহী পরিচালক সামছুল আলম জানান, আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চলছে। আমি কারো কাছ থেকে খোলা চেক গ্রহন করিনা। তিনি বলেন, যারা কর্মসুচি পালন করছেন তারা সবাই অর্থ আত্মসাৎ মামলার আসামী।

মানববন্ধন কর্মসুচিতে মেহেরপুরের আমদহ গ্রামের আমিরুল ইসলাম, খুলনার মাসুদা পারভিন, রাজশাহীর বাঘা উপজেলার লক্ষিনগর গ্রামের আজিজুল আলম, শৈলকুপার সাবিনা ইয়াসমিন ও গাইবান্ধার সুই গ্রামের এবিএম মাহবুবুর রশিদসহ ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধন ও অনশন কর্মসুচি শেষে তারা ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক এসএম রফিকুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক এসএম রফিকুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে বিষয়টি সরকারের সামনে তুলে ধরার ব্যবস্থা করা হবে।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top