দীর্ঘ ১৪ বছর পালিয়ে থেকেও রেহাই পেলনা ঝিনাইদহের ভ্যান চালক হত্যা মামলার আসামি আক্তার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-
ঝিনাইদহের চাঞ্চল্যকর ভ্যান চালক রেজাউল শেখকে গত ২০১০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি পুর্ব শত্রুতার জের ধরে পরিকল্পিতভাবে গলা কেটে হত্যা করা হয়। দীর্ঘ ১৪ বছর পলাতক থাকার পর গত ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এ মামলার ২নং আসামি আকতার হোসেন কে গ্রেফতার করেছে
র‍্যাব-৬।গত কাল (২৮ মার্চ) দিবাগত রাতে গাজীপুর সদর উপজেলার বাহাদুরপুর পারটেক্স প্লাস্টিক লিমিটেডের ৩ নং গেইটের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

ভ্যান চালক রেজাউল হত্যা কান্ডের বিবরণ দিয়ে র‍্যাব সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার দিন রাত আনুমানিক ১০টা ১৫ মিনিটের দিকে রেজাউলের ভাতিজা কাশেম নামের এক ব্যক্তি তাকে মোবাইলে ফোন করে। ভাতিজা কাশেমের ফোন পেয়ে রেজাউল তার স্ত্রীকে অবহিত করে। পরে বাড়ি থেকে বের হয়ে পাশের বাগানে পুর্ব থেকে দাড়িয়ে থাকা বশির ও কবির নামের দুইজনের সাথে বেরিয়ে যায়।

এদিকে পরেরদিন রেজাউলের ভায়ের মেয়ে হালিমা খাতুনের মাধ্যমে তার স্ত্রী জানতে পারে যে, তার স্বামীর গলা কাটা লাশ ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের পেছনে দেলোয়ারের পুকুরের উত্তর পাড়ে বাগানের ভেতর পড়ে আছে। খবর পেয়ে ভাসুরের মেয়েসহ অন্যান্য লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে স্বামীর লাশ দেখতে পায় এবং থানা পুলিশকে অবহিত করে। থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল লিপিবদ্ধ করে লাশ ময়না তদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করেন। পরে ভ্যান চালক রেজাউলের স্ত্রী বাদী হয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তবে, প্রাথমিক পর্যায়ে বর্ণিত আসামী আকতার হোসেনের নাম মামলার এজাহারে উল্লেখ ছিলনা বলে জানা যায়। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার তদন্তে হত্যার অন্যতম মূল হোতা বলে বেরিয়ে আসে আকতার হোসেনের নাম। ঘটনার পর থেকেই আকতার হোসেন পলাতক ছিল। নির্মম এই হত্যাকান্ডের খবর বিভিন্ন জাতীয়, স্থানীয়, ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়াসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হয়। জনমনে সৃষ্টি করে ব্যাপক চাঞ্চল্যের। ঘটনাটি জানতে পেরে র‍্যাব-৬, ছায়াতদন্ত শুরু করে এবং হত্যার সাথে জড়িত আসামীদেরকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে অভিযান অব্যাহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৮ মার্চ আনুমানিক দুইটা ৫ মিনিটের সময় র‍্যাব-৬, গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে যে, চাঞ্চল্যকর ভ্যান চালক রেজাউল শেখ হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত ২ নং আসামী জিএমপি গাজীপুর সদর উপজেলার বাহাদুরপুর এলাকায় অবস্থান করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে তারা ঘটনার সত্যতা যাচাই ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের উদ্দেশ্যে সেখানে একটি যৌথ অভিযান পরিচালনা করেন। সেসময় জিএমপি গাজীপুর সদর উপজেলার বাহাদুরপুর পারটেক্স প্লাস্টিক লিমিটেডের ৩ নং গেইটের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। আসামি মোঃ আকতার হোসেন (৫৫), ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুর এলাকার মৃত নুর আলীর ছেলে। ঘটনার বিবরণ দিয়ে র‍্যাব-৬ এক তথ্য বিবৃতিতে এমনটিই জানান সাংবাদিকদের। র‍্যাব আরো জানান, প্রাথমিক জিঙ্গাসাবাদে রেজাউল হত্যার সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছে আসামী আকতার হোসেন। পরে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে ঝিনাইদহ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান র‍্যাব।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top