হরিণাকুণ্ডুতে মাতৃত্বকালীন ভাতা নিয়ে বানিজ্যের অভিযোগ

হরিণাকুণ্ডু (ঝিনাইদহ) থেকে রাব্বুল হুসাইন

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুর দৌলতপুর ইউনিয়নে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের আওতাধীন ‘মা ও শিশু সহায়তা’ (মাতৃত্বকালীন ভাতা) কার্ডের অনলাইন আবেদনে সরকার নির্ধারিত ফি’র চেয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের খবর পাওয়া গেছে। ইউনিয়নের একাধিক ভাতা ভোগীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ঐ ইউনিয়নের ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা ও চেয়ারম্যানের কথিত ‘বিশেষ সহকারী’ ইস্রাফিল
হোসেন এই অর্থ বানিজ্যের সাথে জড়িত। ‘মা ও শিশু সহায়তা’ (মাতৃত্বকালীন ভাতা) কার্ডের অনলাইন আবেদনে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের খবর সংগ্রহ করতে গেলে ইস্রাফিল হোসেন সাংবাদিকদের দেখে নেওয়ারও হুমকি দিয়েছেন।

জানা গেছে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচিতে উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের ডিজিটাল সেন্টার কর্তৃক অনলাইনে ২ শতাধিক আবেদন সম্পন্ন করা হয়।
অনলাইনে আবেদন করতে সরকার নির্ধারিত ৪০ টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও উদ্যোক্তা ইসরাফিল হুসাইন অধিকাংশ ভাতাভোগীদের নিকট থেকে জনপ্রতি ৪০০ শত থেকে ৫০০ শত টাকা করেছেন বলে ভাতাভোগীরা এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন। এভাবে ভাতাভোগীদের নিকট থেকে নিয়মবহির্ভূত অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ইউনিয়নবাসী।

জানা গেছে, ইউনিয়নের রিশখালী মোল্লাপাড়া গ্রামের হিরা খাতুন, গোবরাপাড়া গ্রামের লিমা খাতুন,
জাহানারা খাতুন, ফতেপুর গ্রামের নাসিমা খাতুনসহ ২ শতাধিক ভাতাভোগীর অধিকাংশের নিকট থেকে ক্ষেত্রবিশেষে ৪০০ থেকে ৫’শ টাকা আদায় করেছেন দৌলতপুর ইউপি চেয়ারম্যানের কথিত ‘বিশেষ সহকার’ ইস্রাফিল হোসেন। এদিকে মাতৃত্বকালীন ভাতা কার্ডের অনলাইন আবেদনে নিয়মবহির্ভূত অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়ে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐ ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের এক ভাতাভোগী বলেন, মাতৃত্বকালীন ভাতা কার্ডের অনলাইনে আবেদনের জন্য ইস্রাফিল আমাদের কাছ থেকে প্রথমে ২ শত নিয়ে আবার পরে ৫ শত টাকা নিয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে ডিজিটাল সেন্টারের উদ্দ্যোক্তা ইস্রাফিল হোসনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, কয় টাকা নেব তা দেখার আপনি কে? এ বিষয়ে বাড়াবাড়ি করলে আপনার ভালো হবে না।

দৌলতপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, কাগজপত্রের জন্য কিছু টাকা বেশি নিয়ে থাকতে পারে। তাছাড়া উদ্যোক্তাদের আলাদা কোন বেতনের ব্যবস্হাও তো নেই। তাই এভাবেই করতে হয়।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মুন্সী ফিরোজা সুলতানা সাংবাদিকদের জানান, মাতৃত্বকালীন ভাতা কার্ডের অনলাইন আবেদন বাবদ ৪০ টাকার বেশী যদি কেউ অতিরিক্ত ফি আদায় করে তাহলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

হরিনাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিত সাহা বলেন, এ ব্যাপারে এখনো লিখিত অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্হা নেওয়া হবে।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top