হরিণাকুণ্ডুতে পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে লাখ টাকা চাঁদাবাজি, জনতার হাতে আটক

হরিণাকুণ্ডু (ঝিনাইদহ) থেকে রাব্বুল হুসাইন

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলাতে অবৈধ প্রতিষ্ঠানে কখনো পুলিশ (সুপার), সার্কেল এসপি, ডিবি পুলিশের ওসি, আবার কখনো ওসি’র নাম ভাঙ্গিয়ে মোঃ ইকবাল হোসেন (৪০) নামে এক ব্যাক্তি নিয়মিত মোটা অংকের চাঁদা তুলাসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে চলেছেন। প্রতারক ইকবাল উপজেলার ভায়না ইউনিয়নের বাকচুয়া (লক্ষীপুর) গ্রামের শফি শাহ্ এর ছেলে। জানা গেছে, প্রতারক ইকবাল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নাম ভাঙ্গিয়ে এবং সুসম্পর্কের কথা বলে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি ও বোকা বানাতেন এবং বিভিন্ন কাজের অজুহাতে তাদের নিকট হতে মোটা অংকের টাকাসহ সুবিধা আদায়ের মাধ্যমে প্রতারণা করে আসছিলেন। প্রতারণার মাধ্যমে মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া লাখ লাখ টাকায় বিলাসী জীবন যাপন করছেন তিনি। এদিকে পুলিশ সুপার নাম পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে হরিণাকুণ্ডু’র আলোচিত রকিবুল ইসলাম ওরফে বান্ঠা’ কয়েকদিন আগে চুয়াডাঙ্গা থেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন। হরিণাকুণ্ডুতে আরেক, বান্ঠা’র সন্ধান পাওয়া গেছে যে এসপি, সার্কেল এসপি’ আবার কখনো ওসি’র নাম ভাঙিয়ে তদ্বিরের কথা বলে হরিণাকুণ্ডুতে বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। কয়েকদিন আগে উপজেলার এক ব্যক্তির নিকট থেকে ১ লক্ষ ৫ হাজার টাকা নেন তদ্বিরের জন্য সার্কেল এসপি’কে ঘুষ প্রদানের কথা বলে। তদ্বিরের ঘটনাটি ভূয়া প্রমানিত হওয়ায় স্হানীয় জনতা শুক্রবার ২৯ সেপ্টেম্বর বিকেলে প্রতারক ইকবালকে আটক করেন। ইকবাল প্রতারণা করে এ টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। পরে এক সালিশের মাধ্যমে ১ লক্ষ ৫ হাজার টাকা ফেরত প্রদান সাপেক্ষে প্রতারক ইকবালকে ছেড়েও দেওয়া হয়েছে। একাধিক সুত্রে আরও জানা গেছে, ইকবাল উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়, বিশেষ করে তার গ্রামে, নানা কায়দায় চাঁদাবাজির অভিযোগই বেশি তার বিরুদ্ধে। আর রাজনৈতিক নেতাদের নানাভাবে নানা কৌশলে, হেনস্তা করার প্রবণতা ছিল তার মধ্যে। মানুষকে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি, হুমকি ধামকি দেখিয়ে ভূয়া সার্কেল এসপি’র অভিনয়ে নানা কৌশল অবলম্বন করে এই ধরণের চাঁদাবাজি করে আসছে। এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রবিউল ইসলাম জানান, সমাজের ভাইরাস ইকবাল, সে নানা সময়ে প্রশাসনের কথা বলে মানুষের ভয়ভীতি দেখিয়ে এলাকায় প্রচুর ক্ষতি করে থাকে। এলাকাবাসী এই ইকবাল লোকের কারণে অতিষ্ঠ। এলাকাবাসীর দাবী প্রশাসন ঘটনাটি তদন্তপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করবেন। এদিকে ইকবাল বিভিন্ন সময়ে আমাকে পুলিশ প্রশাসনের ভয়ভীতি দেখিয়ে আমার কাছ থেকে ৪ লক্ষ টাকা নিয়েছে বলে সাংবাদিক-দের জানান উপজেলার ভায়না ইউনিয়নের লক্ষিপুর গ্রামের মিন্টু মালিতা। সার্কেল এসপিসহ প্রশাসনের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রতিনিয়ত চাঁদা তুলাসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে চলেছেন ইকবাল এমন প্রশ্নের জবাবে হরিণাকুণ্ডু থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবু আজিফ ৩০ সেপ্টেম্বর শনিবার জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি, সার্কেল এসপি অত্যন্ত ভালো মানুষ কিন্তু স্যারের নাম ভাঙ্গিয়ে এমন অপকর্ম কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে সার্কেল এসপি ( শৈলকুপা সার্কেল) অমিত কুমার বর্মন বলেন, বিষয়টি ফেসবুকের মাধ্যমে আমি জেনেছি। ইকবাল আমাদের টুকটাক সোর্সের কাজ করে থাকে। আমার তথা প্রশাসনের ঘুষ দেওয়ার কথা বলে কারো নিকট থেকে টাকা নিলে দায়টা তার। এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top